কলকাতা: তাঁকে দেখে, মুগ্ধ হয়ে পর্দায় তিনি গেয়ে উঠতেন, 'কাজল হয়ে রাখব ধরে, দুটি চোখের ভ্রমরে..'
এই গানের সুর কানে এলেই বাঙালির মনে ভেসে ওঠে যে হাসিমুখ... তাঁর প্রয়াণের প্রায় ৪ দশক অতিক্রান্ত! মহানায়ক...বাঙালির চোখে তিনি চিরপ্রেমিক। উত্তমকুমার (Uttam Kumar)।
আর যাঁকে দেখে পর্দায় তাঁর কণ্ঠে এমন কালজয়ী গান শোনা যেত, তিনি সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ছবির ইতিহাসে উত্তম-সুচিত্রার জুটি যদি কিংবদন্তি হয়, তাহলে খুব একটা পিছিয়ে নেই উত্তম-সাবিত্রীর রসায়নও। কিন্তু মহানায়কের মৃত্যুদিবসের বয়স বাড়ে কেবল.. সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় বিশ্বাস করেন, উত্তমকুমার আজও বিরাজমান।
২৪ জুলাই, উত্তমকুমারের প্রয়াণদিবসের ৪৩ বছর। আজও বাঙালি মজে তাঁর হাসির মায়ায়, অভিনয়ের মায়াজালে। আর উত্তমকুমারের নায়িকা.. সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়? ৪৩ বছরও তাঁকে বিশ্বাস করাতে পারে না, উত্তমকুমার নেই। এবিপি লাইভকে মহানায়ককে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের গলায় ঈষৎ অবিশ্বাস, ঈষৎ হতাশাও। অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি উত্তমকুমারের মৃত্যুকে বিশ্বাস করি না। বিশ্বাস করি না উনি নেই। আর যাঁর মৃত্যুকেই বিশ্বাস করি না, তাঁর স্মৃতিচারণা কী করে করব! আমার কাছে ও এখনও উনি জীবন্ত। ইন্ডাস্ট্রিকে উনি যা দিয়ে গিয়েছেন, তাতে এখনও কারও পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়, যে উনি আর নেই।'
মঞ্চ থেকে শুরু করে রুপোলি পর্দা, সফল অভিনয়, নিখুঁত রসায়নে বার বার দর্শকদের মনজয় করেছে তাঁদের জুটি। সহ-অভিনেতা উত্তমকুমারের কোন শিক্ষা সাবিত্রীর জীবনে আজও সবুজ? অভিনেত্রী বলছেন, 'ফ্লোরে ২ জনই ২ জনকে শিখিয়েছি। আলাদা করে বেছে নেওয়া অসম্ভব। আর ওই যে.. যাঁর মৃত্যুকেই বিশ্বাস করি না তাঁর স্মৃতি নিয়ে কিছু বলা যায় না। যদি আপনার মনে হয় উত্তমকুমার নেই, ওঁর যে কোনও একটা ছবি দেখে নেবেন। দেখবেন উনি সঙ্গে সঙ্গে জীবন্ত হয়ে গিয়েছেন আপনার চোখে।'
মৃত্যুদিবসে উত্তমকুমারের নিজের বাড়িতেও কখনও কোনও বিশেষ আয়োজন করা হয় না। তবে এই দিনটা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দরজা। অনুরাগীরা এসে সম্মান জানাতে পারেন মহানায়ককে। যে বাড়িতে মহানায়কের ছোঁয়া রয়েছে, সেই ইতিহাসকে ছুঁয়ে শিহরিত হতে পারেন... প্রতিবার নতুন করে। উপলদ্ধি করতে পারেন... মহানায়ক সত্যিই মৃত্যুর চেয়ে বড়।