মুম্বই: পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস'-এর ট্রেলার লঞ্চ ঘিরে গত ১৬ অগাস্ট তুলকালাম বাধে ITC রয়্যাল বেঙ্গল হোটেলে। তাই নিয়েই এবার শুরু হয় রাজনীতির চাপানউতোর! একদিকে পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তৃণমূল আবার এই সিনেমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবেই দেখছে। আর তাই ঘিরে 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস' নিয়ে বাংলাতেই তুঙ্গে তরজা। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে ভিডিও-বার্তা দিয়েছেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী।
এক্স হ্যান্ডেলে পরিচালক বলেছেন, 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস' সারা বিশ্বে রিলিজ করবে। কিন্তু সবারই মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে হয়ত ছবিটি নিষিদ্ধ করা হবে। হল মালিকরাও তাঁকে বলছেন, ছবিটি নিষিদ্ধ না করা হলেও তাঁদের উপর এতটাই রাজনৈতিক চাপ আছে যে , ছবিটা দেখালে বড় মূল্য চোকাতে হতে পারে তাঁদের। তাই তাঁরা ছবিটি দেখাতে ভয় পাচ্ছেন। এই ভয় থেকেই গত ১৬ অগাস্ট ছবির ট্রেলারও দেখানি তাঁরা। তাই যখন একটি প্রাইভেট হোটেলে ট্রেলারটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু বাংলার পুলিশ কোনও অজানা কারণে তা দেখাতে দেয়নি। পরিচালক বলেন,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কর্মীরাও বারবার ছবিটি নিষিদ্ধ করার স্বপক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। অনেকগুলি ভিত্তিহীন এফআইআর করা হয়েছে। তাই মুখ্যমুন্ত্রীর কাছে তাঁর নিবেদন, ছবিটি যেন রিলিজ করতে দেওয়া হয়। নিজের স্বপক্ষে বেশ কয়েকটি যুক্তিও রাখেন তিনি। বিবেকের দাবি 'একজন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান কর্তব্য হল তাদের রাজ্যের নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা। সেন্সর বোর্ড(সিবিএফসি) একবার কোনও চলচ্চিত্রকে অনুমোদন দিলে, এর মুক্তি নিয়ন্ত্রিত করার যে কোনও চেষ্টাই সাংবিধানিক নীতির পরিপন্থী।' পরিচালক ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে এবং নোয়াখালি গণহত্যার উল্লেখ করে বলেন, এই ছবি কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী শক্তিগুলির মুখোশ খুলে দেওয়ার চেষ্টা, যা ইতিহাসে উপেক্ষিত।
বিবেক-বার্তা শুনে, তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী জানালেন, 'বিবেক অগ্নিহোত্রী প্রতিটি ছবির আগেই এ ধরনের বিতর্ক তৈরি করতে ভালবাসেন। কারণ বিতর্ক তৈরি না-হলে ওঁর এই প্রোপাগান্ডা মার্কা ছবি হলে গিয়ে দর্শক তো দেখবে না ! যদি বিতর্ক তৈরি হয়, টিআরপি হয়, তাহলে কিছু মানুষ ওঁর সিনেমা হলে গিয়ে দেখবে। বাঙালি ইতিহাস সচেতন, আত্মগরিমা সচেতন। বাঙালি..অরিন্দম চ্যাটার্জিকে যে সিনেমায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাই বলে দেখানো হয়, পরবর্তী কালে উনি আবার নিজে ইন্টারভিউতে বলছেন অরিন্দম ঠাকুর বলে, বাঙালির চোদ্দ পুরুষের ভাগ্য ভাল যে, তিনি অনুরাগ ঠাকুরকে রবীন্দ্রনাথের ভাই বানিয়ে দেননি...সেই সিনেমাকে বাঙালি এমনিই বর্জন করবে।'
এর আগে বিবেকের 'দ্য তাসখন্দ ফাইলস' (২০১৯) এবং 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' (২০২২) নিয়েও নানা বিতর্ক হয়েছিল। এই ছবিটিতে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ দাস, অনুপম খের, পল্লবী যোশী, দর্শন কুমার, পুনীত ইসার, গোবিন্দ নামদেব, মোহন কাপুর,প্রমুখ।