কলকাতা: তারকাদের জীবনের দিকে এক ঝলক তাকালেই মনে হয়, সবকিছু যেন সুন্দর, সাজানো, পরিপাটি। তবে বিষয়টা ঠিক তেমন নয়, তারকাদেরও অনেক সময়েই, অনেক কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে আসতে হয়। সদ্য একটি সাক্ষাৎকারে, নিজের ছোটবেলার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমান (A R Rahman)। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি তুলে ধরেছেন, কীভাবে তাঁর ছোটবেলা কেটেছে কষ্ট করে। রহমানের বাবা মাও যথেষ্ট সংগ্রাম করেই জীবন কাটিয়েছেন। খুব ছোটবেলাতেই বাবাকে হারান এ আর রহমান। আর তারপরেই শুরু হয় তাঁর জীবন সংগ্রাম।
রহমান সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর সঙ্গীতে উৎসাহিত হওয়ার প্রথম ধাপই হল তাঁর মা। মায়ের জন্যই প্রথম রহমানের গানের দুনিয়ায় পা রাখা। মাত্র ৯ বছর বয়সেই বাবাকে হারান রহমান। এরপরে তিনি যখন স্টুডিওতে যাওয়া শুরু করেন, তখন তাঁর বয়স নেহাতই কম। তাঁর দ্বিগুণ বা তিনগুণ বয়সীদেরই তখন স্টুডিওয় আসা যাওয়া। তাঁদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন রহমান। স্কুল, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধূলা.. সব আনন্দই যেন পিছনে পড়ে গিয়েছিল। খুব অল্পবয়স থেকেই সংসারের দায়িত্ব পড়ে যায় তাঁর কাঁধে।
রহমান ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'আমার ছোটবেলা খুবই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছি। আমি অনেক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। বাবা, ও ঠাকুমাকে হারাই খুব অল্প বয়সেই। তখন আমার বয়স মাত্র ৯ বছর। প্রত্যেকদিনই যেন এক একটা করে আঘাত নেমে আসত পরিবারের ওপর। কিন্তু আমার মা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। সমস্ত কষ্ট সহ্য করে তিনি একাই আমাদের বড় করেছেন। আমাদের রক্ষা করতে ওঁকে অনেক কিছুই করতে হয়েছে। মা ছিলেন এমন একজন নারী যিনি সমস্ত অপমান সহ্য করেছেন আমাদের বড় করে তোলার জন্য।'
রহমান আরও বলেন, 'আমি আমার জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই চেন্নাইতেই কাটিয়েছি। আমি চেন্নাইতেই জন্মেছি। ওখানেই আমার বাবা স্টুডিওতে কাজ করতেন। আমরা কোডামবক্কমের কাছে, যেখানে সমস্ত স্টুডিও ছিল, সেখানে বাস করতাম। পরিবারের বাকি সদস্যরা আমার মা আর বাবার সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। সব কেড়ে নিয়ে আমার বাবা মাকে রাস্তায় বের করে দেওয়া হয়। বাবা সেই সময়ে একটা ভাড়াবাড়িতে ওঠেন আমাদের নিয়ে। আমাদের বাড়িটি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টাও করেছিলেন। এই সমস্ত কারণে ওঁর শরীর স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। শৈশবের এই অন্ধকার দিকটা আমায় ভীষণ কষ্ট দেয়।'