মুম্বই:  সদ্য প্রকাশিত হয়েছে হেমা মালিনীর ওপর লেখা বই হেমা মালিনী: বেওয়েন্ড দ্য ড্রিম গার্ল। সেই বইতেই স্বপ্নসুন্দরীর জীবনের নানা অজানা কথা সামনে এসেছে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে কোনও একসময় পরিবারের চাপে জিতেন্দ্রর সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে পর্যন্ত বসতে হয়েছিল হেমাকে, কারণ, তাঁর পরিবারের লোক মোটেই মেনে নেননি ধর্মেন্দ্রকে। এদিকে প্রথম থেকেই হেমা-জিতেন্দ্র একে অপরের প্রেমে মশগুল ছিলেন। কিন্তু পরিবারের থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। সম্পর্কটি লুকিয়ে রাখতে তাঁরা বাইরে দেখা করতেন না। যেহেতু তাঁরা একসঙ্গে সেই সময় বহু ছবিতে কাজ করছিলেন, তাই তাঁদের দেখা সাধারণত শ্যুটিং সেটেই হত। এরমধ্যেই একদিন হঠাত্ উধাও হয়ে যান হেমা। যদিও তারপর তিনি ফিরে আসেন, কিন্তু তারপর থেকে পরিবারের লোকেদের কড়া নজরদারিতে চলে যান অভিনেত্রী।

এদিকে সেইসময় জিতেন্দ্রর সঙ্গে দুটি ছবিতে কাজ করছিলেন হেমা। একটি হল দুলহান (১৯৭৪), অপরটি হল খুশবু (১৯৭৫)। জানা যায়, জিতেন্দ্ররও হেমার প্রতি একটা আলাদা দুর্বলতা ছিল। যদিও হেমা সেব্যাপারে কোনওদিনই তেমন আগ্রহ দেখাননি। তাই বিষয়টা মেনে নিয়ে তাঁরা দুজনেই ভাল বন্ধু হয়ে যান। এমনকি তাঁদের বন্ধুত্ব এতটাই গভীর ছিল যে জিতেন্দ্রর সঙ্গে মুমতাজের সম্পর্কের কথা সেসময় একমাত্র স্বপ্নসুন্দরীই জানতেন। তবে সম্পর্কের এই সমীকরণ নিয়ে মোটেই খুশি ছিলেন ধর্মেন্দ্র। বরং তিনি সবসময়ই জিতেন্দ্রকে সন্দেহ করতেন। তার জেরে কোনও একসময় শ্যুটিং-ফ্লোরে তাণ্ডবও করে আসেন ধর্মেন্দ্র।

ইতিমধ্যেই হেমার পরিবার মেয়েকে রাজি করান জিতেন্দ্রর সঙ্গে বিয়ে করতে। এই বিয়ে নিয়ে জিতেন্দ্রর পরিবারে যখন খুশির মেজাজ, তখন অস্থির অবস্থা হেমা-জিতেন্দ্র। এমনকি একতা কপূর-তুষার কপূরের বাবা এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে বলেনও তিনি হেমাকে ভালবাসেন না। হেমাও তাঁকে ভালবাসেন না। শুধুমাত্র পরিবারের আবদারে বিয়ে করছেন তাঁরা দুজনে। এই বিয়ে যাতে কোনওভাবে বাধাপ্রাপ্ত না হতে পারে, সেই জন্যে দুই পরিবারের লোক মাদ্রাজ চলে যান। কিন্তু এই খবরে নাকি একেবারেই ভেঙে পড়েন ধর্মেন্দ্র। সেইসময় তিনি তাঁর বিমানসেবিকা গার্লফ্রেন্ড শোভা সিপ্পির বাড়িতে যান। সেখান থেকে তাঁরা মাদ্রাজে যান অবস্থা দেখতে।

যেখানে হেমার বিয়ে হচ্ছিল, সেই বাড়িতে ধর্মেন্দ্র পৌঁছতেই নাকি, অভিনেত্রীর বাবা নায়ককে কার্যত গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। প্রশ্ন ছিল, তাঁর মেয়ের জীবন থেকে কেন চলে যাচ্ছেন না ধর্মেন্দ্র? কিন্ত সেসময় মদ্যপ ধর্মেন্দ্র কিছু শুনতে চাননি। অবশেষে সেদিন দুজনকে একটি ঘরের মধ্যে একলা কথা বলতে দেন পরিবারের সদস্যরা। ঘরের মধ্যে এই বিয়ে না করার জন্যে হেমাকে অনুরোধ করেন ধর্মেন্দ্র। সেদিন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে হেমা বিয়ের জন্যে কয়েকদিন সময় চান। তাতে মোটেই রাজি ছিলেন না জিতেন্দ্র এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু হেমা শান্ত ভাবে তাঁর মনের কথা জানিয়ে দেন। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে সেদিন বিয়ের আসর ছেড়ে বেরিয়ে যান জিতেন্দ্র এবং তাঁর বাবা-মা।