মুম্বই: বলিউড বড় পিচ্ছিল জায়গা। প্রতি পা ফেলতে কসরত করতে হয় এখানে, যাতে পিছলে পড়তে না হয়। এই কথাটাই বুঝেছিলেন জিনাত আমন, নিজের জীবন দিয়ে।

তিনি তখন গোটা দেশের স্বপ্নে আসেন। তাঁর ফিগার, চাউনির মোহে বাঁধা পড়েছেন সব বয়সের পুরুষ। কিন্তু পুরুষদের সম্পর্কে জিনাতের ধারণা কখনওই খুব একটা স্বচ্ছ ছিল না। কেরিয়ারের সেরা সময়ে তিনি পড়েছিলেন সঞ্জয় খানের প্রেমে। বলিউডের এই ফ্লপ হিরো তখন বিবাহিত তো বটেই, তিনটে ছেলেমেয়েও রয়েছে। তবু আবদুল্লার শ্যুটিংয়ের সময় জিনাতের প্রেমে পড়তে তাঁর অসুবিধে হয়নি।

আর সেই প্রেমের ভয়ানক মূল্য চোকান জিনাত। সেটা ১৯৮০-র ঘটনা। মুম্বইয়ের এক পাঁচ তারা হোটেলে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করেন সঞ্জয়, তাঁর সাধের প্রেমিক। সামনে অনেকে ছিলেন। কেউ একটা আঙুল তুলেও জিনাতকে সাহায্য করেননি।

জিনাত তখন লোনাভালায় শ্যুটিং করছিলেন। সঞ্জয় মুম্বই থেকে ফোন করেন, মেজাজ দেখিয়ে বলেন, সব কাজ ফেলে জিনাতকে তখনই আবদুল্লার একটি গানের কিছুটা অংশের শ্যুটিং নতুন করে করতে হবে। জিনাত বলেন, তিনি অন্য ছবির জন্য তাঁর ডেট ইতিমধ্যেই দিয়ে ফেলেছেন। তাতে সঞ্জয় বলেন, ছবি নির্মাতাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে তাঁর।

ক্ষুব্ধ জিনাত সোজা চলে আসেন সঞ্জয়ের বাড়িতে, শোনেন, তিনি তাজ হোটেলে পার্টি করছেন। সেখানে গিয়ে শ্যুটিংয়ের ডেটের কথা বলতে চান জিনাত। নেশাগ্রস্ত সঞ্জয় একটি ঘরে ডেকে নেন তাঁকে। তারপর চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক মার। বারবার জিনাত পড়ে যাচ্ছেন আর সঞ্জয় তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। গোটা সময়টা সঞ্জয়ের স্ত্রী জারিন তাঁর পাশে থেকে স্বামীকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন। একটা সময় তিনিও শুরু করেন জিনাতকে মারতে।

জিনাতকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি কোনও অতিথি। শেষ পর্যন্ত আসেন হোটেলের এক পরিবেশক। ততক্ষণে জিনাতের মুখ থেকে অঝোরে ঝরছে রক্ত, তাতে মিশেছে চোখের জল। ৮ দিন চিকিৎসা চলে তাঁর। তবু তিনি পুলিশে অভিযোগ করেননি কারণ সঞ্জয়কে ভালবাসতেন তিনি।

অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও জিনাতকে মারধর করেন সঞ্জয়।

তবু এই সঞ্জয়কেই ১৯৭৮-এ বিয়ে করেন জিনাত। সে বিয়ে এক বছরও টেকেনি।