কলকাতা: মাত্র ৫২ বছর বয়সে থেমে গেল সুর-সফর। প্রয়াত জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গর্গ (Zubeen Garg)। নিজেকে কেবল মুম্বইতেই আটকে রাখেননি জুবিন, গান গাইতে পারতেন ৪০ টা ভিন্ন ভিন্ন ভাষায়। বাজাতে পারতেন বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। একের পর এক দুর্দান্ত সব গান দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। হিন্দি থেকে শুরু করে বাংলা, জুবিনের সুর এখনও তরতাজা অনুরাগীদের মনে। কিন্তু কীভাবে শুরু হয়েছিল জনপ্রিয় এই শিল্পীর সুরের সফর? ফিরে দেখা, জুবিন-জীবন। 

জুবিন গর্গের জন্ম মেঘালয়ের তুরায়। অসমের একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা ছিলেন মোহিনী মোহন বড়ঠাকুর আর মা ছিলেন লিলি বড়ঠাকুর। কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে তিনি নিজের পদবি বদলে, করে নিয়েছিলেন মেটা। সেই সময়ে তিনি জুবিন মেটা বলেই পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীকালে, নিজের গোত্র গর্গ-কে তিনি পদবী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। জুবিনের বাবা ছিলেন একজন ম্যাজিস্টেট। পাশাপাশি, কপিল ঠাকুর নাম নিয়ে কবিতা ও গান লিখতেন তাঁর বাবা। জুবিনের মা, প্রয়াত লিলি বড়ঠাকুর ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী। ফলে গান ছিল তাঁর রক্তে। জুবিন নিজেও গান ভালবাসতেন অল্প বয়স থেকেই। 

স্কুল শেষ করে, বিজ্ঞানের শাখা নিয়ে কলেজে ভর্তি হন জুবিন। কিন্তু ততদিনে তাঁর মাথায় চেপে বসেছে গানের নেশা। সেই নেশাকেই পেশা করবেন বলে মনে করলেন তিনি। তবে সোজা পথে চলেনি জুবিনের জীবন। সবটা হয়নি ফুল বেছানো। জুবিনের বোন ছিলেন জঙ্কি বড়ঠাকুর। তিনি নিজে ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী। কিন্তু ২০০২ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর। বোনের মৃত্যু তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। একটু অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে যাচ্ছিলেন জুবিনের বোন। সেখানে যাওয়ার পথেই একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্য হয় জুবিনের বোনের।  বোনের স্মৃতিকে নিয়ে একটি অ্যালবাম বের করেছিলেন জুবিন।

মাত্র ৩ বছর বয়স থেকেই গান গাইতে শুরু করেছিলেন জুবিন গর্গ। সেই ছিল তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি। মায়ের কাছেই প্রথম গান শিখেছিলেন তিনি। ১১ বছর ধরে তিনি পন্ডিত রবিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তবলা শিখেছিলেন। রামানি রাই প্রথম তাঁর আসামের ফোক গানের সঙ্গে পরিচিতি ঘটান। স্কুল জীবন থেকেই গান কম্পোজ করতে শুরু করেছিলেন জুবিন। ১৯৯২ সালে সঙ্গীতে সোনার পদক পান গর্গ। আর তার পর থেকেই তিনি গানকেই নিজের কেরিয়ার হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।