Claim: ভারতে সমস্ত কাগজের নোট নিষিদ্ধ হয়ে যাবে এবং এর বদলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সারা দেশে চালু হবে ডিজিটাল মুদ্রা।
Fact: এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেশ কিছু কেরালার সংবাদপত্রের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। আদপে এগুলি কোচির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সামিটের বিজ্ঞাপন মাত্র।
সমাজমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়েছে মলয়ালম সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের অসংখ্য ছবি। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে দেশে আবার নোটবন্দি হবে অর্থাৎ দেশ থেকে সমস্ত কাগজের নোট নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে এবং তার বদলে চালু হবে ডিজিটাল মুদ্রা। এক্স হ্যান্ডলে জনৈক নেটিজেন এই প্রতিবেদনের একটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, 'মলয়ালম সংবাদমাধ্যমে একটাই খবর যে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশেই কাগজের নোট নিষিদ্ধ করা হবে, ফের নোটবন্দি হবে এবং শুধুমাত্র ডিজিটাল মুদ্রায় কাজ হবে বা ডিজিটাল মুদ্রাকেই বৈধ বলে মানা হবে।
মূল পোস্ট দেখুন এখানে
এই ধরনের সংবাদপত্রের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে সমস্ত আর্থিক লেনদেন শুধুমাত্র ডিজিটাল মুদ্রাতেই করা হবে, এমনটাই জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ধাপে ধাপে কাগজের নোটগুলি তুলে নেওয়া হবে কেন্দ্রের তরফে। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সমস্ত নোট আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিজিটাল মুদ্রায় বদলে নিতে হবে। আর এই কাজ করা হচ্ছে মূলত কালো টাকা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে, ভারতের অর্থনীতিকে আরও শক্তপোক্ত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই ক্লিপিংগুলিতে দাবি করা হচ্ছে এই নীতির মাধ্যমে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তির নিরিখে অনেক উচ্চস্থানে পৌঁছে যাবে ভারত। আর এই উদ্যোগ ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনেই নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে সংবাদপত্রে।
ফ্যাক্ট চেক
নিউজমিটার সংবাদসংস্থার ফ্যাক্ট চেক ডেস্কের তদন্তে দেখা গিয়েছে এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভাইরাল হওয়া পেপার ক্লিপিং আদপে কেরালার সংবাদমাধ্যমে ছাপা একটি মার্কেটিং ফিচার। পেপার ক্লিপিংয়ে উল্লিখিত বেশ কিছু নাম দেখে এই দাবিকে সত্য বলে মনে হতে পারে। আরবিআই গভর্নর অরবিন্দ কুমারের নাম রয়েছে এতে, রয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী রাজীব সিং এবং বিরোধী দলনেতা ড. অঞ্জলি মেহেরার নামও। এই ক্লিপিংয়ে দাবি করা হয়েছে যে নোবেল প্রাপক ড. রিন পটেল ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর জোর দিয়েছেন, তবে দেখা গিয়েছে এই নামটি আদপে কাল্পনিক। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য এখনও পর্যন্ত কোনো সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি।
একটি কিওয়ার্ড সার্চ করে ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত 'মাতৃভূমি' সংবাদপত্রের প্রথম পাতা খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে গুগল লেন্সের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায় এটি আদপে মার্কেটিং ফিচার। এই পাতায় ডিসক্লেমারও দেওয়া আছে, 'সংবাদপত্রের সামনের পাতায় প্রকাশিত প্রতিবেদন কাল্পনিক, 'দ্য সামিট অফ ফিউচার ২০২৫' অনুষ্ঠানের প্রচার ক্যাম্পেইনের একটি অংশ হিসেবে এটি ছাপা হয়েছে। কোচির জৈন ডিমড-টু-বি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এই সামিট আয়োজিত হচ্ছে।' এমনকী ফ্যাক্ট চেক ডেস্ক এশিয়ানেট নিউজের একটি ভিডিয়ো ক্লিপিং খুঁজে পেয়েছে যেখানে স্পষ্ট করেই সংবাদপ্ত্রে প্রচারিত নোটবন্দির খবরকে একটি বিজ্ঞাপনী কৌশল বলে দাবি করা হয়েছে।
পোস্ট দেখুন
অর্থাৎ কেরালার সংবাদপত্রে প্রচারিত এই খবর আদপে মিথ্যা এবং ভুলভাবে প্রচারিত।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে নিউজমিটার এবং শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসেবে, প্রতিবেদনটির অনুবাদ করেছে এবিপি লাইভ বাংলা।