আরিয়া (বিহার) : 'প্রেমিকা_বনি_মা !' এমনই হ্যাশট্যাগ সহ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি পোস্ট। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে। এক যুবতীর এমনই গল্প এখন ছড়িয়ে পড়েছে সমাজ মাধ্যমে। ভাইরাল খবর অনুসারে, বিহারের আরিয়ার এক যুবতী তাঁর প্রেমিকের বাবাকে বিয়ে করে নিয়েছেন, শুধুমাত্র এই কারণে যে তিনি সরকারি চাকরি করেন। অন্যদিকে, তাঁর প্রেমিক বেকার। এই তথ্যের সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় অনেকে এক পুরুষ ও এক মহিলার একে অপরকে মালা পরানোর মুহূর্তের ছবিও শেয়ার করছেন। 


এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সেই পোস্টে প্রায় ১৫ হাজার লাইক পড়ে যায়। শেয়ারও করেছেন প্রায় ৯০০ জন। 


সোশাল মিডিয়ার পোস্ট অনুযায়ী, এই ছবি বিহারের। নেহা নামের ওই যুবতী তাঁর প্রেমিকের বাবাকে বিয়ে করেন যিনি সরকারি চাকরি করেন। বেশ কয়েক বছর ধরে আরিয়ার বাসিন্দা নেহার প্রেম চলছিল সুমন্ত নামে ওই যুবকের সঙ্গে। সুমন্তর বাবা রাজা রাম প্রসাদ সরকারি চাকরি করেন। ৫ বছর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। ছেলে বেকার। সুমন্তর বিয়ের জন্য নেহা ও রাজা রাম দেখা করেন। কিন্তু, প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। নেহা ভাবেন, বেরোজগার সুমন্তর থেকে তাঁর বাবা ভালো।


নোট  : এটা ভালোবাসা নয়, এটা অর্থের প্রতি ভালোবাসা।


এই পোস্ট ঘিরে অনকে সংশ্লিষ্ট মহিলা ও পুরুষের নামে আপত্তিজনক মন্তব্য করেছেন। অনেকে ওই যুবতীকে লোভীও বলেছেন। 'বিহারে সরকারি চাকরির উন্মাদনা দেখুন' জাতীয় পোস্টও করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু, আজতক তাদের ফ্যাক্ট চেকে পেয়েছে, সংশ্লিট পোস্টে যে পুরুষ ও মহিলাকে দেখে গেছে, তাঁরা মধ্যপ্রদেশের হরদা জেলার। এই ছবির সঙ্গে পোস্টে যে ক্যাপশন লেখা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। 




চর্চায় এই ছবি


কীভাবে সামনে এল সত্যিটা ?


ভাইরাল হওয়া ছবিগুলির মধ্যে থেকে একটিকে নিয়ে তার কি রিভার্স সার্চ করে আজতক। এর মাধ্যমে, একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে ওই পুরুষ ও মহিলাকে দেখা যায়। ভিডিওটিতে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের একটি ওয়াটারমার্কও দেখা যায়। কিছু অনুসন্ধানের পরে জানা যায় যে, এটি মধ্যপ্রদেশের হারদায় বসবাসকারী একজন সাব ইন্সপেক্টরের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ওয়াটারমার্ক। যদিও বর্তমানে ভাইরাল ভিডিওটি এই অ্যাকাউন্টে নেই ।


অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিওর থাম্বনেইলে একজন ব্যক্তির ছবি দেখে আজতক৷ বিশেষ ব্যাপার হল, ভাইরাল হওয়া ছবিতে একই ব্যক্তির ছবি পিছনের দেওয়ালে ঝুলতে দেখা যায়।  পোস্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি তাঁর (সাব ইন্সপেক্টর) বাবা। এটা দেখে মনে করা হয়, ভাইরাল ভিডিওটি হয়তো এই ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছে...।


এটা দেখে হরদার এই সাব ইন্সপেক্টরকে ফোন করা হয়। তিনি জানান যে ভিডিওতে দেখা দম্পতি তাঁর বোন এবং তাঁর স্বামী। ভিডিওটি নিয়ে তিনি আজতককে পুরো তথ্য দেন। ভিডিওটির পেছনের পুরো ঘটনাটি বলেন। তিনি বলেন, "আমার বোনের স্বামী অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন। সে ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫-এ দ্বিতীয়বার বিয়ে করে । আমি ইনস্টাগ্রামে একটি বিয়ের ভিডিও শেয়ার করেছি। কিন্তু কিছু দুষ্টু লোক বিহারের একটি গল্প দিয়ে এটি ভাইরাল করে দিয়েছে। ছবিগুলিতে অশালীন মন্তব্য হওয়ায় পুরো পরিবার চাপে রয়েছে।" তাঁর পরিচিতরা তাঁকে প্রতিনিয়ত এইসব অশালীন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট পাঠান...।


আজতক জানায়, সাব ইন্সপেক্টর তাদের তাঁর বোনের বিয়ের কিছু ছবিও পাঠিয়েছিলেন, যেগুলো ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে অনেকটাই মিল।


ডিসক্লেমার : এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আজতক এবং শক্তি কালেক্টিভের (Fact Check : फैक्ट चेक: प्रेमी के पिता से शादी करने वाली बिहार की महिला की ये कहानी है टोटल फर्जी) অংশ হিসাবে প্রতিবেদনটির অনুবাদ করেছে এবিপি লাইভ বাংলা।