নয়াদিল্লি: স্মার্টফোন কেনার ব্যাপারে খুঁতখুঁতে ক্রেতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন প্রস্তুতকারী কোম্পানি একের পর এক নজরকাড়া মডেল বাজারে নিয়ে আসছে। ক্রেতাদের শুধু বাজেট স্থির করে পছন্দসই ফোনটি কিনলেই হল। গত ফেব্রুয়ারিতেই বেশ কিছু দারুণ ফোন বাজারে এসেছে। এরমধ্যে রয়েছে ৫জি ফোনও। এগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রিমিয়াম ও বেশ কয়েকটি বাজেট ফোন। এখন দেখে নেওয়া যাক, ফেব্রুয়ারিতে বাজারে আসা কয়েকটি প্রিমিয়াম ফোন সম্পর্কে। এই তালিকায় রয়েছে Samsung Galaxy S10 Lite এবং OnePlus 7T প্রো-র মতো স্মার্টফোন।
Samsung Galaxy S10 Lite
স্যামসাং তাদের Galaxy S10 Lite সদ্যই লঞ্চ করেছে। ভারতে ৫১২ জিবি স্টোরেজ ক্ষমতার ভ্যারিয়েন্টের দাম ৪৪,৯৯৯ টাকা। এর আগে কোম্পানি এই ফোনের 8GB RAM ও 128GB স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট লঞ্চ করেছিল। এখন এই ফোনের দুটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে।
Samsung Galaxy S10 Lite –এ পারফরম্যান্সের জন্য কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 855 প্রোসেসর রয়েছে। এই ফোনে পাওয়া যায় অ্যান্ড্রয়েড ১০ ভিত্তিক ওয়ান ইউআই 2.0। এতে রয়েছে 6.7 ইঞ্চি Full HD+, সুপার এমোলেড প্লাস ইনফিনিটি- O ডিসপ্লে। ফটোগ্রাফির জন্য এর রিয়ারে রয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ। এর প্রাইমারি ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেল, দ্বিতীয় ক্যামেরা ১২ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের এবং তৃতীয় ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো লেন্সের। সেলফির জন্য রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।


OnePlus 7T Pro
এই ফোনে রয়েছে ৯০ হার্টর্জের ৬.৬৭ ইঞ্চির সুপার এমোলেড ডিসপ্লে। ফটোগ্রাফির জন্য এই ফোমে রয়েছে 48MP + 8 MP ও 16MP ক্যামেরা সেটআপ। সেলফির জন্য রয়েছে 16MP ক্যামেরা। পারফরম্যান্সের জন্য রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্লাস চিপসেট। ফোনে রয়েছে ৮ জিবি RAM ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজের সুবিধা। এই ফোনের দাম ৫৩,৯৯৯ টাকা। এই ডিভাইসের ব্যাটারি 4085 mAH, ওয়ার্প চার্জ ৩০ টি টেকনিক সহ।
রিয়ার ক্যামেরার ক্ষেত্রে কোম্পানি ট্রিপল লেন্স সেটআপ দিয়েছে। ক্যামেরায় আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের জন্য কোম্পানি দিয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের দ্বিতীয় সেন্সর। জুম ভালো করতে এতে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের তৃতীয় ক্যামেরা সেন্সর। ফোনে রয়েছে ব্লুটুথ 5.0 টেকনিক। রয়েছে 4500mAh ব্যাটারি, যা সুপার ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। ফোনের সঙ্গে পাওয়া যায় ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জার। এতে রয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। ফোনের ওজন ১৮৬ গ্রাম। কোম্পানির এটি প্রথম স্মার্টফোন, যাতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্রোসেসর রয়েছে। ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফির জন্য এই ফোন খুবই ভালো।
Redmi K20 Pro

Xiaomi-র প্রিমিয়াম স্মার্টফোন Redmi K20 Pro পারফরম্যান্স ও কোয়ালিটির জন্য পরিচিত। এই ফোনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ভিত্তিক ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের সোনি IMX586 সেন্সরের, দ্বিতীয়টি ১৩ মেগাপিক্সেলের ও তৃতীয়টি ৮ মেগাপিক্সেলের। সেলফি প্রেমীদের জন্য থাকছে ২০ মেগাপিক্সেল পপ আপ ক্যামেরা।এতে রয়েছে 6.39 ইঞ্চির এমোলেড ফুল এইচডি প্লাস ডিসপ্লে। এর অ্যাসপেক্ট রেশিও 19.5:9।
এছাড়া এই ফোনে রয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। ডুয়েল সিম সাপোর্ট সহ এই ফোনে অ্যান্ড্রয়েড পাই 9.0 ভিত্তিক MIUI 10 অপারেটিং সিস্টেম। পারফরম্যান্সের জন্য রয়েছে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্রোসেসর। গ্রাফিক্সের জন্য রয়েছে অ্যাড্রিনো ৬৪০। এতে রয়েছে 27W ফাস্ট চার্জিং সহ সাপোর্ট সহ 4000mAh ব্যাটারি। এর দাম শুরু ২৭,৯৯৯ টাকা থেকে।

Samsung Galaxy Note 10 Lite

এই ফোনে রয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ। প্রাইমারি ক্যামেরা f/2.0 অ্যাপারচার সহ ৪৮ মেগাপিক্সেলের। দ্বিতীয় ক্যামেরা আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের ১২ মেগাপিক্সেলের। তৃতীয় ক্যামেরা ম্যাক্রো লেন্স সহ ৫ মেগাপিক্সেলের। সেলফির জন্য রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ফোনে রয়েছে 6.7 ইঞ্চি Full HD+, সুপার এমোলেড প্লাস ইনফিনিটি- O ডিসপ্লে। ডিসপ্লে খুবই রিচ ও ব্রাইট। ভিডিও, ফটো দেখা ও গেম খেলার ক্ষেত্রে আনন্দ বেড়ে যায়।
এই ফোনে রয়েছে ফাস্ট চার্জি সাপোর্ট সহ 4500mAh ব্যাটারি। সঙ্গে পাওয়া যায় ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জার। কোম্পানির দানি, পূর্ণ চার্জে এই ব্যাটারি দুই দিন কাজ করতে পারে। সেফটির জন্য রয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। এর ৮ জিবি RAM ও ১২৮ জিবি RAM-এর দাম ৪০,৯৯৯ টাকা।

iQOO3
এই ফোন তিন ভ্যারিয়েন্টে বাজারে এসেছে। এর 8GB+128GB 4G ভার্সনের দাম ৩৬,৯৯০ টাকা। 8GB+256GB 4G ভার্সনের দাম ৩৯,৯৯০ টাকা। এর 12GB+256GB 5G ভার্সনের দাম ৪৪,৯৯০ টাকা। কোয়ান্টাম সিলভার, ভলক্যানো অরেঞ্জ ও টরনেডো ব্ল্যাক কালারে পাওয়া যায়।
নতুন iQOO 3 –এ 6.44 ইঞ্চির E3 সুপার AMOLED ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে, যােত HDR 10+ স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফিকেশন সাপোর্ট রয়েছে। পারফরম্যান্সের জন্য রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 865 প্রোসেসর। এই ফোন অ্যান্ড্রয়েড 10 ভিত্তিক iQOO UI 1.0 অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করবে। গ্রাফিক্সের জন্য থাকছে adreno 650GPU।
ফটোগ্রাফির জন্য রয়েছে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ। এরমধ্যে প্রাইমারি ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেল, ১৩ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স, ১৩ মেগাপিক্সেল ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স ও ২ মেগাপিক্সেলের ডেপ্থ সেন্সর। সেলফির জন্য ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। ভিডিও মেকিংয়ের ক্ষেত্রে এই ফোনকে কার্যকরী ক্যামেরা স্মার্টফোন বলা চলে।

এই ফোনে রয়েছে 55W ফাস্ট চার্জি সাপোর্ট সহ 4440এমএইচ ব্যাটারি। এই ফোনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কানেক্টিভিটি। এই ফোন ৪ জি, ৫ জি, ব্লুটুথ 5.0, Wi-Fi,জিপিএল ও ইউএসবি পোর্ট টাইপ-সি-র মতো ফিচার সাপোর্ট করে।