নয়া দিল্লি: দূষণ নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দীপাবলির সময়ে, তারপরে শীতকালের শুরুতে দেশজুড়ে বারবার সামনে এসেছে বায়ু দূষণের ছবি। আতঙ্ক ছড়িয়েছে দিল্লির চিত্র। একই উদ্বেগের ছবি দেখিয়েছে কলকাতার বাতাসও। দূষণের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শ্বাসকষ্টের ঘটনা। শিশু থেকে বয়স্ক, নানা বয়সের লোকজন শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগেছেন বায়ু দূষণের কারণেই। 


বায়ুদূষনের প্রসঙ্গ উঠলেই মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হল বাইরের বাতাসের পরিস্থিতি, অন্যটি হল ঘরের ভিতরের বাতাসের পরিস্থিতি (indoor air)। ঘরের বাইরে গাড়ির ধোঁয়া, ধুলোকণা এবং আরও কিছু কিছু জিনিস দূষণের পরিমাণ বাড়িয়ে থাকে। ঘরের ভিতরের বাতাসের মানেও এই দূষকগুলি প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, বাইরের বাতাসের চেয়েও ঘরের ভিতরের বাতাসের মান স্বাস্থ্যের উপর বেশি প্রভাব ফেলে। ঘরের বাতাস যদি দূষিত থাকে তাহলে তা মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সংবাদ সংস্থা IANS সূত্রের খবর, গুরুগাঁওয়ের আর্টেমিস হাসপাতালের  Neurointerventional Surgery-এর প্রধান ড. বিপুল গুপ্তাও এমনই মনে করেন। তিনি বলেন, 'ক্ষতিকর ধুলোকণা, গ্যাস ঘরের বাতাসে থাকলে বিভিন্ন হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত রোগ, ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ বা সংক্রমণ ঘটাতে পারে।'


কী ভাবে দূষণ:
বিভিন্ন দূষণকারী গ্যাস, নির্মাণ কাজের ধুলো, তামাকের ধোঁয়া, কাঠ পোড়ার ধোঁয়ার কারণে ঘরের ভিতরের বাতাস দূষিত হতে পারে। IANS-সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন এয়ার ফ্রেশনার, সুগন্ধীতে Volatile Organic Compounds এবং বেঞ্জিন থাকে, সাফাই করার রাসায়নিকে এমন কিছু জিনিস থাকে যা দূষণ ঘটাতে সক্ষম। এছাড়া, রান্নার জন্য যে ধোঁয়া তৈরি হয় সেটাও ঘরের ভিতরের বাতাসের মান খারাপ করতে পারে। একটি সংস্থার বরিষ্ঠ ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার জিজ্ঞার লি (Ginger Lee) জানাচ্ছেন, আধুনিক বাড়িগুলি অনেকবেশি আটকানো, অর্থাৎ বায়ু চলাচলের জায়গা কম, ফলে সেক্ষেত্রে দূষক পদার্থগুলি বাড়ির মধ্যেই আটকে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। 


Indian Journal of Community Medicine-এর রিপোর্ট অনুযায়ী পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে Indoor Air Pollution-এর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব, বাইরের বাতাসের দূষণের চেয়ে ঢের বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation)-এর দাবি, ইনডোর এয়ার পলিউশন-এর কারণে অন্তত ৪.২ মিলিয়ন মানুষ সময়ের আগেই মারা যান। 


এক্ষেত্রে অনেক সংস্থাই বাজারে এয়ার পিউরিফায়ার (Air Purifier) এনেছে। ঘরের ভিতরের বাতাস দূষণমুক্ত করার কাজে তা ব্যবহারও করা হচ্ছে। 


কী পরামর্শ:
ড. বিপুল গুপ্তার পরামর্শ, বাড়িতে বা ঘরে পর্যাপ্ত হাওয়া চলাচলের (Air Ventilation) ব্য়বস্থা থাকুক। তাহলে ঘরের ভিতরে দূষক পদার্থ আটকে থাকবে না। এর পাশাপাশি, নির্দিষ্ট সময় অন্তর ঘর পরিষ্কার করার কথাও বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে ইনডোর প্ল্যান্টও লাগানো যেতে পারে। ঘরের ভিতরে গাছ থাকলে তা দূষণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। 


আরও পড়ুন: কোন ফলের সঙ্গে কী থাকলে সহজেই ওজনে লাগাম?