নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই অকালেই প্রয়াত হয়েছেন বিগ বস ১৩-র বিজয়ী সিদ্ধার্থ শুক্লা। মাত্র ৪০ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হল তাঁর। তরতাজা সিদ্ধার্থর অকালমৃত্যুতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বরাবরই সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন সিদ্ধার্থ। তাঁর এভাবে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুতে স্তম্ভিত সবাই।


সম্প্রতি যে সব পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে যে, ৫০ বছরের বেশিদের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এমনটা কিন্তু নয়। এখন ৪০-এর কম বয়সেরও অনেকেরই হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে।


করোনা অতিমারী পর্বে হার্ট অ্যাটাক নিঃশব্দ ঘাতক


পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের মৃত্যুতে কার্ডিওভাস্কুলার রোগ ও হার্ট স্ট্রোক ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর তুলনায় ভারতীয়দের ৮-১০ বছর আগেই হার্ট অ্যাটাকের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আর এরমধ্যে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বয়স ৫৫-র কম।


চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, পারিবারিক ইতিহাস, নিম্নমানের কোলেরেস্টেরলের হার, শারীরিক ব্যায়ামের অভাব হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।


অকাল মৃত্যু এড়াতে ১০ টি আয়ুর্বেদিক  টিপস


সূর্যোদয়ের দুই ঘণ্টা আগে হাঁটার অভ্যেস


আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সূর্যোদয়ের ঘণ্টা দুয়েক আগে হাঁটার অভ্যেস খুবই স্বাস্থ্যকর। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, খুব ভোরে যাঁদের ওঠার অভ্যেস তাঁরা হাইড্রেটেড থাকেন এবং অক্সিজেনের মাত্রাও ভালো থাকে তাঁদের শরীরে। 
আর্ট অফ লিভিংয়ের শ্রী শ্রী তত্ত্ব পঞ্চকর্মর সিনিয়র চিকিৎসক মিতালি মধুস্মিতা বলেছেন, কারণ, খুব ভোর মন খুবই সজাগ থাকে এবং তখন যাই-ই করা হোক না কেন, তার পূর্ণ উপকার অর্জন করা যায়।


দুই গ্লাস ইষদুষ্ণ জলপান


আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দুই গ্লাস ইষদুষ্ণ জলপান করার পরামর্শ দিয়েছেন। এই অভ্যেস শরীরে টক্সিন জমা হতে দেয় না।শরীরে ক্ষারীয় কার্য সঠিক থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। 


যোগ ও ধ্যান অনুশীলন


প্রত্যেকদিন যোগ ও ধ্যান অনুশীলন করলে চাপ কমাতে ও মেজাজ খোলামেলা রাকতে   সক্ষম এন্ডোরফিন ও সেরোটিনিন হরমোনের মাত্রা সঠিক থাকে।  ধারাবাহিক চাপ ও অবসাদ হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। এ জন্য ধ্যান ও যোগ অনুশীলনের ক্ষেত্রে কোনওভাবেই সমঝোতা করা উচিত নয়।


সূর্যস্নান


আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো শরীরে তেল মেখে সূর্যের আলোয় বসলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। লসিকানালী তন্ত্রও উন্নত হয়, রক্ত ডিটক্সিফাই হয়। শরীরে শুষ্কতা দূর হয়। হাড়ের সন্ধিস্থলে জমাটভাবে দূর হয়। 


সঠিক সময়ে আহার


বেলা ১২ টা থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যে মধ্যাহ্নভোজ সেরে ফেলতে হবে। তার আগে সকালের জলখাবার খেতে হবে সাতটার মধ্যে। পর্যাপ্ত  হজমের জন্য দুইবার খাওয়ার মাঝে ৪-৫ ঘণ্টা ব্যবধান রাখতে হবে।  মাঝে জল খেতে হবে। সেই সঙ্গে বাদাম ও ফলও খাওয়া যেতে পারে। ঘুমোতে যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে। ভালো ঘুম ও হজমের জন্য এটা প্রয়োজন। 


দিবানিদ্রা এড়িয়ে চলতে হবে


দুপুরের ঘুম এড়িয়ে চলতে হবে। দিনের ঘুম ক্লান্তি ও আলস্য বাড়ায় ও নিদ্রাচক্র ব্যাহত করে। বয়স্করা অবশ্য কিছুটা গড়িয়ে নিতে পারেন। 


হলুদের গুণ


ঘুমোতে যাওয়ার আগে হলুদ-মিশ্রিত উষ্ণ বাদাম দুধ খাওযার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। সংক্রমণ ঠেকাতে হলুদ খুব ভালো ইমিউনোমোডুলেটর


গ্রীষ্ণ ও শীতে কী করণীয়?


গরমে মাত্রাতিরিক্ত ব্যায়াম এড়িয়ে যোগ ও প্রাণায়ামের ওপর জোর দিতে হবে। সেইসঙ্গে হাল্কা ব্যায়াম। কারণ, পরিবেশের তাপমাত্রা শরীরের সঞ্চিত এনার্জি ক্ষয় করে। শীতে বা অন্যান্য ঋতুতে ভারী ব্যায়াম চলতে পারে। 


ধ্যান


বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সারাদিন খুব ব্যস্ত থাকলে ধ্যান খুবই জরুরি। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রয়োজন শীতল মস্তিষ্কের। এজন্য ধ্যান খুবই সহায়ক। 


টাটকা খাবার খেতে  হবে


আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা  সঠিক সময়ে সদ্য রান্না করা খাবার খাওযার ওপর গুরুত্ব দেন। এতে শরীরে এনার্জির মাত্রা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সঠিক থাকে।