কলকাতা: সারা দেশ জুড়ে দিন দিন বাড়ছে সার্ভিকাল ক্যানসারের রোগী। মহিলাদের মধ্যে অসচেতনতার কারণেই এমনটা হচ্ছে। এই বিশেষ ক্যানসারটি আসলে চিকিৎসা করে সারিয়ে ফেলা যায়। শুধু তাই নয়, ঠিক সময় রোগটি ধরা পড়লে রোগীকে বহাল তবিয়তে সুস্থ করে তোলা যায়। এছাড়াও, রোগটি ঠেকানো বলেও সম্ভব বলে জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
কী বলছে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান
সম্প্রতি ল্যানসেট অব গ্লোবাল হেলথে এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গিয়েছে, ভারতে কমবেশি ২১ শতাংশ মহিলা এই মারণরোগে আক্রান্ত। অর্থাৎ বর্তমানে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শুধু যে আক্রান্তের হারের নিরিখে ভয়ের কারণ হয়ে উঠছে সার্ভিকাল ক্যানসার, তা নয়। বরং মৃত্যুর হারের নিরিখেও এই ক্যানসার চোখ রাঙাচ্ছে। সারা দেশে এই ক্যানসারে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন মারা যাচ্ছেন ভারতে।
ক্যানসারের পিছনে আসলে একটি ভাইরাস
একটি বিশেষ ভাইরাসের কারণেই এই ক্যানসারের সূত্রপাত হয়। ভাইরাসের নাম হিউম্যানপ্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি। কীভাবে ছড়ায় এই মারণেরোগের ভয়ঙ্কর ভাইরাসটি? বিশেষজ্ঞদের কথায়, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়ায়। যৌনতার দিক থেকে সক্রিয় এমন প্রায় ৫০ শতাংশ মহিলার শরীরেই হিউম্যানপ্যাপিলোমা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে খুব কম সংখ্যক মহিলার শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধে।
কী বলছেন চিকিৎসক
আইএএনএস-কে রুবি হল ক্লিনিকের কনসাল্টিং গাইনোকোলজিস্ট চিকিৎসক মণীশ মাচাভে জানান, এই ক্যানসারে শরীরে কোশ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বাড়তে থাকে। প্রাথমিকভাবে সার্ভিক্স যাদের রয়েছে, তাদের শরীরেই মারাত্মক আকার নেয় এই প্রবণতা। সার্ভিকাল ক্যানসার টিকা নিয়ে প্রতিরোধ করা যেতে পারে। পাশাপাশি রোগটি দ্রুত ধরা পড়লে সারিয়ে তোলাও সম্ভব। কিন্তু দিন দিন সেই ক্যানসারই জটিল হয়ে উঠছে আমাদের দেশে। এই সমস্যা শুধু ভারতের নয়। চিকিৎসকের কথায়, বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এই সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে।
কেন বাড়ছে এই ক্যানসার?
এর জন্য বেশ কিছু কারণকে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসক। প্রথমেই বলা হচ্ছে অসচেতনতার কথা। রোগটি নিয়ে সচেতনতার অভাবেই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। অথচ ঠিক সময় ধরা পড়লে রোগটি সহজেই সারিয়ে তোলা সম্ভব। অন্যদিকে অনেক ক্ষেত্রে বাধ সাধছে চিকিৎসার খরচ ও গুণমান। ক্যানসার চিকিৎসা খরচসাপেক্ষ বলে অনেকেই ঠিক চিকিৎসা নিতে পারছেন না।এছাড়াও, তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়া, বারবার গর্ভবতী হওয়া ক্যানসারের আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তথ্য়সূত্র: আইএএনএস
আরও পড়ুন: Morning walk: শীতের সকালে মর্নিং ওয়াক ভাল না খারাপ ?