নয়াদিল্লি: আচার্য চাণক্য যে উপদেশ দিয়েছিলেন বা জীবনের যে বিষয়গুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন, সেগুলি আজও প্রাসঙ্গিক। মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, সেই সব বিষয় নিয়েই আলোচনা করেছিলেন চাণক্য। যে সমস্ত বিষয়গুলি মানুষের জীবনে সমস্যা তৈরি করে, সেগুলি নিয়েও আলোচনা করেছিলেন তিনি।


চাণক্যের মতে, অনেক কষ্ট করে তবেই মানব জীবন লাভ করা যায়। তাই সব মানুষেরই এমন কিছু কাজ করা উচিত, যার মাধ্যমে তাঁদের বহু বছর ধরে স্মরণ করা হবে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই চাণক্যের এই নীতি মেনে চলেন না। এর ফলেই তাঁদের জীবনে কঠিন সময় আসে।

চাণক্যের মতে, প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু সু-অভ্যাস থাকে। এই অভ্যাসগুলি বজায় রেখেই বহু মানুষ সাফল্য পান এবং ইতিহাসে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হন। কিন্তু যাঁরা খারাপ অভ্যাসের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন, তাঁরা ধীরে ধীরে পতনের দিকে এগিয়ে যান। সেই কারণে কয়েকটি অভ্যাস দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন চাণক্য। সেগুলি হল-

অন্যদের নিন্দা করা

চাণক্যের মতে, অন্যদের নিন্দা করার অভ্যাস একেবারেই ভাল নয়। এটি অভ্যাস হলেও, আসলে গুরুতর অসুখ। যে ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হন, তাঁর চরিত্রের পতন আরম্ভ হয়। তাই এই অভ্যাস যাতে কোনওদিনই না হয়, সেই চেষ্টা করা উচিত।

মিথ্যা বলার অভ্যাস

যে মিথ্যা কথা বলে, তাকে কেউই পছন্দ করে না। এটি এমন একটি অভ্যাস, যা সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই মিথ্যা বলার অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। যারা সাফল্য অর্জন এবং জীবনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য মিথ্যা বলে, তারা সাফল্য পেলেও, সেটি স্থায়ী হয় না। সত্যি সামনে এলে তাঁদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

লোভ-লালসা ত্যাগ করতে হবে

চাণক্যের উপদেশ, অন্যদের নিন্দা করার মতোই খারাপ অভ্যাস হল লোভ-লালসা। লোভ যে কোনও ব্যক্তিকে বিপথগামী করতে পারে। কেউ লোভের শিকার হলে তাঁর বোধবুদ্ধি লোপ পায়। লোভের বশে একদিন সবকিছু হারাতে হয়। তাই কোনও সময়ই লোভ করা উচিত নয়।

অন্যদের দুর্বল ভাবা উচিত নয়

কোনও সময়ই অন্যদের দুর্বল আর নিজেকে শক্তিশালী ভাবা উচিত নয়। এর ফলে একদিন সমস্যায় পড়তে হতে পারে। কোনও ব্যক্তিই দুর্বল নন। সময়ই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। আজ যাঁকে দুর্বল বলে মনে হচ্ছে, তিনিই ভবিষ্যতে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেন। তাই প্রত্যেককেই সম্মান করা উচিত। কারণ, সময় কাকে কোন পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়ে দেবে, সেটা কেউই বলতে পারেন না।

অহঙ্কার করা উচিত নয়

কারও কখনও অহঙ্কার করা উচিত নয়। কারণ, অহঙ্কারী ব্যক্তি অন্যদের সঙ্গে থাকলেও, সবসময়ই নিজেকে একা মনে করেন। অহঙ্কারী ব্যক্তিদের কোনও বন্ধু থাকে না। অহঙ্কারই পতনের কারণ হয়ে উঠতে পারে। আজ পর্যন্ত কেউই অহঙ্কার করে জীবনে কিছু করতে পারেননি। তাই প্রত্যেকেরই অহঙ্কারমুক্ত থাকা উচিত।