নয়াদিল্লি : চিকুনগুনিয়া । ২০ বছর পর এমন ভয়াবহ ভাবে ফিরে এল সেই মশাবাহিত রোগের এমন আতঙ্ক। তীব্র জ্বর সেই সঙ্গে জয়েন্টে ব্যথা, ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে যেভাবে সারা বিশ্বে ছড়াচ্ছে এই অসুখ , তাতে আশঙ্কিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। হু বলছে, ঠিক সময় রোগ নির্ণয় না হলে, বা ভুল চিকিৎসা হলে ফল হতে পারে ভয়াবহ।
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই অসুখ। এবছর এখনও পর্যন্ত ১১৯টি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে চিকুনগুনিয়ায়। অধুনা সারা বিশ্বে ৫.৬ বিলিয়ন মানুষ চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সংবাদপত্র দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ, WHO-র গবেষক-চিকিৎসক ডায়ানা রোজাস আলভারেজ বলেছেন, এমন পরিস্থিতি ২০০৪-২০০৫ সালে ঘটেছিল। আবার এত বছর বাদে এমন শক্তিশালী ভাবে ফিরল চিকুনগুনিয়া আতঙ্ক। ২০ বছর আগে ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জে তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল চিকুনগুনিয়া। সেই সঙ্গে প্রভাবিত হয়েছিল বিশ্বের বহু দেশই।
WHO-এর মেডিকেল অফিসার ডায়ানা রোজাস আলভারেজ জানিয়েছেন, চিকুনগুনিয়ার উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল, অতিরিক্ত জ্বর, জয়েন্টে তীব্র ব্যথা। চিকিৎসায় দেরি হলে আনতে পারে মারাত্মক পরিণতি। সৃষ্টি করতে পারে দীর্ঘমেয়াদী অক্ষমতা। এখনও পর্যন্ত চিকুনগুনিয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনও অনুমোদিত চিকিৎসা নেই । এই রোগের বাহক মশা। তাই মশার কামড় থেকেই সাবধান হতে হবে। একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ২০০৫-০৫ সালের কথা বলেন। ২০০৪-২০০৫ সালের চিকুনগুনিয়া মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিস ভারত মহাসাগরের ছোট ছোট দ্বীপে। সেইবার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষকে সংক্রামিত করে এই মশাবাহিত অসুখ। আবার ২০২৫ সালের গোড়ার দিক থেকে এই অসুখ ছড়াচ্ছে। লা রিইউনিয়ন, মায়োট এবং মরিশাস সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে ছড়াচ্ছে এই রোগ। শুধু লা রিইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছে। এবার ইউরোপে ভাইরাসটির ক্রমবর্ধমান বিস্তার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষ উদ্বিগ্ন।
চিকুনগুনিয়া মূলত এডিস মশা দ্বারা সংক্রামিত হয়। বিশেষ করে এডিস এজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবোপিকটাসই এর বাহক। আবার এই এডিস মশাই ডেঙ্গু এবং জিকা ভাইরাস ছড়ায়। তবে আশার কথা একটাই, এই অসুখ থেকে বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও, জয়েন্টে ব্যথার মতো সমস্যাগুলি কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস ধরে স্থায়ী হতে পারে।