আজকের সময়ে, হৃদরোগের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর মধ্যে একটি গুরুতর সমস্যা হল, Chronic Heart Failure। এটি এমন একটি অবস্থা যখন হৃদপিণ্ড শরীরের প্রয়োজন অনুসারে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পাম্প করতে অক্ষম হয়। এই অবস্থা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং অনেক সময় মানুষ প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করে, যার ফলে রোগটি আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
লক্ষণ-
Chronic Heart Failure-এর প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না। হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অনেক অংশ প্রভাবিত হতে শুরু করে। প্রথমত, রোগী ক্রমাগত ক্লান্তি অনুভব করতে শুরু করেন। পা, গোড়ালি এবং পায়ের আঙুল ফুলে যায়। কখনও কখনও রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব করার সমস্যাও বেড়ে যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে, শ্বাস নিতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট, বুকে টান এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন দেখা যায়। যদি এরকম সমস্যা দেখেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পুরুষদের মধ্যে ঝুঁকি বেশি: মিথ নাকি সত্য?
অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, পুরুষদের মধ্যে Chronic Heart Failure বেশি দেখা যায়, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। এবিপি নিউজের তথ্য অনুসারে, নয়াদিল্লির এক নামী চিকিৎসকের কথায়, ৪৫ বছর বয়সের আগে, পুরুষদের এই রোগের ঝুঁকি মহিলাদের তুলনায় বেশি থাকে এবং এই বয়স পর্যন্ত এই অনুপাত ৭:৩ থাকে। কিন্তু ৫০ বছর পর এই অনুপাত প্রায় সমান হয়ে যায়। অর্থাৎ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই সমানভাবে ঝুঁকিতে থাকেন।
Chronic Heart Failure-এর ধরন এবং চিকিৎসা
এই রোগটি চারটি পর্যায়ে বিভক্ত (টাইপ ১ থেকে টাইপ ৪)। টাইপ ১ হল প্রাথমিক পর্যায়, যেখানে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব। টাইপ ২ এবং ৩-এ, শুধুমাত্র ওষুধই যথেষ্ট নয়, এই ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। টাইপ ৪ হল সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা, যখন হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা ৮৫-৯০ শতাংশ পর্যন্ত হারিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে, হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনই একমাত্র বিকল্প। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কথায়, যদি হৃদপিণ্ড ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন, কিন্তু ক্ষতি ৬৫ শতাংশের বেশি হলে জটিলতা বৃদ্ধি পায়।
প্রতিরোধ এবং লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট
এই রোগ প্রতিরোধের জন্য, জীবনধারা পরিবর্তন করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, কারণ যখন আপনার রক্তচাপ বেশি থাকে, তখন রক্ত পাম্প করার জন্য হৃদপিণ্ডকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। দিনে দুই লিটারের বেশি জল পান করবেন না, কারণ এটি ব্লাড ভলিউম বৃদ্ধি করে এবং হৃদপিণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে। নুন গ্রহণ কমিয়ে দিন, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন এবং ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন। এ ছাড়া, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।