Bacteria: বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নানা ধরনের বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকেন। সম্প্রতি এমনই এক গবেষণায় প্রকাশ্যে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলেজের ক্যাফেটেরিয়াতে যে টেবিল (College Cafeteria Table) থাকে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা সাধারণ টয়লেট সিটের (Toilet Seat) থেকে ৬০ হাজার গুণ বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কলেজের নিরিখে এই সমীক্ষা করা হয়েছে এবং পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে গড় হিসেবে। এই গবেষণা পরিচালনা করেছে College Rover। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কলেজ ক্যাম্পাসে জীবাণু যুক্ত এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাথরুম, ডরমেটরির কমন এরিয়া, কম্পিউটার ল্যাবের কিবোর্ড এইসব জায়গায় swabbing করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, swabbing কথার অর্থ হল সাধারণ ভাবে কোনও জায়গা মুছে নেওয়া। এখানে গবেষণার জন্য উল্লিখিত জায়গাগুলিতে কতটা জীবাণু রয়েছে তা বোঝা গিয়েছে swabbing- এর মাধ্যমে। তারপর তার পরিমাণ তুলনা করা হয়েছে বাড়ির বাথরুমে থাকা টয়লেট সিটে উপস্থিত জীবাণুর সঙ্গে। 


বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসের বেশ কিছু জায়গায় swabbing- এর মাধ্যমে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সেই swabs পরীক্ষা করা হয়েছে জীবাণুর ধরন এবং সংখ্যা জানার জন্য। এর পাশাপাশি আবার গবেষকরা ১০০০ পড়ুয়ার সঙ্গে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং হাইজিন সম্পর্কে তাঁরা কতটা ভাবেন, হাইজিন বজায় রাখার জন্য কী কী করেন, সেই বিষয়েও আলোচনা করেছেন। যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে তার রিপোর্ট অনুসারে যেকোনও ক্যাম্পসের মধ্যে পাবলিক বাথরুম অর্থাৎ যা জনসাধারণের (এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন পড়ুয়া, শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য স্টাফ এবং আরও অনেকে) ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়, সেটি হল সবচেয়ে জীবাণু যুক্ত এলাকা। সমস্ত ক্যাম্পাস হটস্পটের ক্ষেত্রেই এই তথ্য প্রযোজ্য। ৪৭ মিলিয়ন colony-forming units (CFU), ৬৪ শতাংশ gram-negative rods এবং ৩৪ শতাংশ টাইপ ২- ক্যাম্পসের বাথরুম ভয়ঙ্কর রকমের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। 


শুধু বাথরুম নয় ক্যাম্পসের লন্ড্রি রুম অর্থাৎ যেখানে জামাকাপড় কাচা হয় সেখানেও জীবাণুর উপস্থিতি চমকে দেওয়ার মতো। এখানে রয়েছে ৩০.৫ মিলিয়ন CFUs, ৯৮ শতাংশ gram-negative rods এবং ২ শতাংশ ব্যাসিলাস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যাম্পাসের লন্ড্রি রুমে জীবাণুর পরিমাণ ক্যাম্পসের ক্যাফেটেরিয়া টেবিলের থেকেও অনেকটা বেশি। এখানে এক লক্ষের থেকে কিছু কম CFUs উপস্থিত থাকে। রান্নাঘরের যে বেসিন বা সিঙ্কে বাসন মাজা হয় সেই জায়গা বেশিরভাগ বাড়ির সবচেয়ে অপরিষ্কার জায়গা। এখানে প্রায় ১১.৪ মিলিয়ন CFUs- এর উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। কিতু গবেষণা বলেছে এই পরিমাণ জীবাণু কিছুই নয়। তুলনা করে দেখা গিয়েছে এর থেকে প্রায় ২.৬ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে কলেজ লাইব্রেরির ডেস্কে। উল্লিখিত গবেষণাতেই এই তথ্যের কথা বলা হয়েছে। 


কলেজ পড়ুয়ারা হাইজিনের ব্যাপারে কতটা সতর্ক তা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে গবেষকরা দেখেছেন বেশিরভাগ কলেজ পড়ুয়া মাসে মাত্র একবার তাঁদের থাকার জায়গা বা লিভিং স্পেস পরিষ্কার করেন। হাঁচি, কাশির সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাইজিন মানা হয় না। এক্ষেত্রে ছাত্রীরা জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে যখন কাউকে দেখেন মুখ না ঢেকেই কাশছে বা হাঁচি দিচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে আনহাইজিনিক লাগে তাঁদের। পাঁচ জনের মধ্যে অন্তত চারজন ছাত্রী এই একই কথা বলেছেন। এই সমীক্ষায় পড়ুয়াদের আরও অনেক খারাপ অভ্যাস প্রকাশ্যে এসেছে। আর সেগুলি সবই চরম আনহাইজিনিক অর্থাৎ অস্বাস্থ্যকর। এই তালিকায় রয়েছে বাথরুমে যাওয়ার পর বেরনোর আগে হাত না ধোয়া, রোজ দাঁত না মাজা, টয়লেট ফ্ল্যাশ ব্যবহার না করা- ইত্যাদি। 


আরও পড়ুন- চুলের গঠন মজবুত করতে, নতুন করে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কারিপাতা, এই উপকরণের সাহায্যে বাড়িতে কীভাবে তেল তৈরি করবেন?