কাফ সিরাপ খেয়েই কি শিশু মৃত্য? গত কয়েকদিন ধরে এই প্রশ্নে তোলপাড় দেশ। মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তির কাফ সিরাপের দিকে। তারপরই অভিভাবকদের মনে আতঙ্ক, তাহলে কি শিশুদের কাফ সিরাপ খাওয়ানো মানেই, জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ? মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে কোল্ডরিফের কাফ সিরাপ খাওয়ার পরই শিশুদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বলে অভিযোগ। শেষমেষ কিডনি ফেল করে মারা যায় একাধিক শিশু। এই ঘটনার পর কড়া পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রও। অ্যাডভাইসরি জারি করে ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের কাফ সিরাপ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। তাহলে কি কাফ সিরাপ মাত্রই ক্ষতিকর? সত্যিটা কী ? 

Continues below advertisement

এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুসারে,  কোল্ডরিফের তামিলনাড়ু উৎপাদন ইউনিট থেকে প্রাপ্ত নমুনাগুলিতে ডাইথিলিন গ্লাইকল (DEG) রয়েছে, যা অবশ্যই ক্ষতিকারক। এই যৌগটি শিল্পের কাজে লাগে, এটি একটি বিষাক্ত শিল্প দ্রাবক। কোনওভাবেই ওষুধে ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। যদিো মধ্যপ্রদেশে সংগৃহীত অনেক নমুনায় ইথিলিন গ্লাইকল বা ডাইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া যায়নি।  

কেন্দ্র অ্যাডভাইসরি জারি করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কাশির সিরাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।  প্রতিটি রাজ্যেই কাফ সিরাপগুলির একাধিক ব্যাচ এবং ব্র্যান্ডের নমুনা যাচাই করে দেখছে। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তার এবং সাধারণ মানুষ , সকলেই উদ্বিগ্ন। ইথিলিন গ্লাইকল (EG) এবং ডাইথিলিন গ্লাইকল (DEG) হল শিল্প দ্রাবক যা সাধারণত অ্যান্টিফ্রিজ, ব্রেক ফ্লুইড, প্লাস্টিক এবং অন্যান্য শিল্প পণ্যে ব্যবহৃত হয়। এগুলি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ওষুধ ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত নয়। এর ব্যবহারে ওষুধটি বিষাক্ত পদার্থে পরিণত হয়। এর ফলে তীব্র বিষক্রিয়ায় সর্বঅঙ্গ বিকল হতে পারে। জানা গিয়েছে, সারা বিশ্বেই এর আগে এমন  বিষক্রিয়ার ঘটনানোর জন্য DEG জড়িত। ২০২২ সালে গাম্বিয়ায়, দূষিত ভারতীয় কাশির সিরাপ খেয়ে প্রায় ৭০টি শিশুর মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে উজবেকিস্তানে, DEG যুক্ত কাশির ওষুধ  খেয়ে বহু শিশু মারা যায়। এর আগেও WHO বারবার শিশু ওষুধে DEG এবং EG দূষণ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বিশেষ করে যেসব শিশুদের কিডনি দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে ওষুধে DEG বা EG উপস্থিতির প্রতিক্রিয়া ভয়ানক হতে পারে।    

Continues below advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা অ্যাডভাইসরিতে বলা হয়েছে,  

  • ২ বছরের কম বয়সের শিশুকে কাফ সিরাপ দেওয়া উচিত নয়।
  • ৫ বছরের কম শিশুদের কাফ সিরাপ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সতর্ক করা হয়েছে।
  • কাফ সিরাপের প্রয়োজন হলে সঠিক মাত্রায় দিতে হবে। 
  • শিশুদের শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখতে হবে।