কলকাতা : প্লেটলেট (platelet count )। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই প্লেটলেটের বিষয়টি সকলের মাথায় বেশি করে ঘোরাফেরা করে। ডেঙ্গির সবথেকে ভয়াবহ বিষয়টিই হল দ্রুত গতিতে প্লেটলেট কমে যাওয়া। আর এই প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা কমে যাওয়া মানেই শরীরে বাইরে ও ভিতরে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া।
- প্লেটলেট কী করে জানালেন হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী
- রক্তের মধ্যে শ্বেতকণিকা, লোহিত কণিকার সঙ্গে থাকে অনুচক্রিকা। যা, রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। প্লেটলেট কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে অতিরিক্ত সময় নেয়
- শরীরের ভিতরে বা বাইরে কোথাও রক্তবাহিকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তপাত শুরু হয়। সেখানে ছুটে আসে অনুচক্রিকা। রক্ত জমাতে সাহায্য করে।
- ধীরে ধীরে শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে গেলে শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা, রক্তের অক্সিজেন বহনক্ষমতা কমতে থাকে।
- দেখা গিয়েছে, বাংলা, ঝাড়খণ্ডের মতো কয়েকটি এলাকার মানুষদের অনুচক্রিকার মাপ বড় । platelet র মাপ বড় হলে automated cell counter ভুল করে তাকে লোহিত কণিকা বলে চিহ্নিত করতে পারে ।
- এ রাজ্যে দেখা গিয়েছে, অনেকের প্লেটলেটের ব্যাস বেশি। তাঁরা ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও কম প্লেটলেট নিয়ে দিব্য ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছেন, কোনও অসুবিধে হচ্ছ না।
- চিকিৎসককে ডেঙ্গির ধরন, রোগীর শরীরের গতিবিধি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন আছে কি না।
- ' প্লেটলেট কিন্তু আপনার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নয়, সামান্য কমলেই সেটা কিনে বাড়াতে হবে। বরং প্রয়োজন ছাড়া প্লেটলেট দিলে লাভ তো হয়ই না, উল্টে ক্ষতি হবে পারে। ফুসফুসের ভয়ঙ্কর ক্ষতি থেকে প্লেটলেটের বিরুদ্ধে শরীর অ্যান্টিবডিও তৈরি করে ফেলতে পারে। তাই সাবধান ! '
- সাধারণত অনুচক্রিকার স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ। চিকিৎসকরা মনে করেন , যদি কখনও কাউন্ট ২০ হাজারের নিচে নেমে যায়; তখন ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের সম্ভাবনা থাকে।
- প্লেটলেট যদি ৫ হাজারের কম হয়; তখন ব্রেন, কিডনি, হার্টের মধ্য রক্তক্ষরণের ভয় থাকে। তবে এমন হতেই পারে এর থেকে প্লেটলেট কাউন্ট বেশি থাকা সত্ত্বেও শরীরের বিভিন্ন অর্গ্যান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হল।
- জ্বর কমার পর কিন্তু প্লেটলেট কমতে পারে। তাই জ্বর কমার পর নিয়মিত রক্তপরীক্ষা করাতে হবে। রিপোর্ট মনিটর করতে হবে।
- প্লেটলেট স্বাভাবিক মাত্রার থেকে কমল মানেই ব্লাডব্যাঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেওয়ার অর্থ নেই।
চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী