কলকাতা: সকাল-সন্ধেয় শিরশিরানি হাওয়া এখন দিব্যি বুঝিয়ে দেয়, শীত (Millet In Winter Diet) প্রায় এসে গিয়েছে। বছরের এই সময়টা নানা ধরনের মেলা-উৎসবে মেতে ওঠার পক্ষে আদর্শ। কিন্তু একই স্বাস্থ্যের দিকে আরও বেশি করে নজর দেওয়া জরুরি। আর সুস্থ থাকতে হলে যেদিকে প্রথমেই নজর দেওয়া দরকার, তা হল খাবার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, শীতকালীন খাবারের তালিকায় বাজরাকে রাখার পক্ষে এখন বহু বিশেষজ্ঞই সওয়াল করছেন। কিন্তু কেন? একবার চোখ বোলান যাক?
নানা গুণ...
একাধিক গুণাগুণ রয়েছে এই শস্যের। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গুণগুলির অন্যতম হল.
- বাজরা গ্লাইসিমিক ইনডেক্স খুব কম। ফলে এটি খেলে আচমকা সুগার বাড়ার আশঙ্কা কম।
- এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশ্বাস বহু বিশেষজ্ঞের। শীতের সময়, কিছু কিছু রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের সুফল দারুণ কার্যকরী।
- ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বাড়াতে বাজরার কার্যকারিতা রয়েছে, ধারণা কারও কারও। এর মধ্যে থাকা প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য শ্বাসকষ্টের সমস্যা কিছুটা হলেও কমাতে কাজে দেয়।
- ডায়েটরি ফাইবারে সমৃদ্ধ বাজরা সার্বিক ভাবে হজমের সমস্যা ঠিক করতেও কাজে দেয়। বিশেষত, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এর উপরে আস্থা রাখতে বলেন অনেকেই।
- তা ছাড়া গ্লুটেন-ফ্রি হওয়ার ফলে সেলিয়াক ডিজিজ আক্রান্তরাও বাজরার তৈরি খাবার সহজে খেতে পারেন।
তবে একটি বিষয়ে মনে রাখার উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। তাঁদের মতে, কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, কারও কারও বাজরা খাওয়ায় অসুবিধা থাকতে পারে। সে জন্য ডাক্তাররা রয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে নিজে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ডাক্তারের মতো চলাই একমাত্র কাম্য।
ইতিহাস...
ইতিহাস বলছে, ৩৫০০-২০০০ ক্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত কোরিয় উপত্যকার বাসিন্দাদের মধ্যে বাজরা খাওয়ার রীতিমতো চল ছিল। তা ছাড়া ভারতীয় শাস্ত্রের একাধিক জায়গায় বাজরার কথা উল্লেখ করা রয়েছে। এমনকি তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে এখনও বাজরার চাল থেকে তৈরি ভাত খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই শস্য সাধারণের খাবার হিসেবে পরিচিত ছিল আমাদের দেশে। কিন্তু ধান, গমের উপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় বাজরা থেকে নজর অনেকটাই সরে আসে। যদিও ২০২৩ সালকেই International Year of Millets বলে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। শুধু রুটি নয়, 'স্য়ুপ', 'পরিজ' বা 'স্মুথি' ---নানা ভাবেই বাজরা খাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন:হিমোগ্লোবিন মানবদেহের জন্য কেন প্রয়োজনীয়? কীভাবে বুঝবেন এই উপকরণের ঘাটতি হয়েছে?