(ডঃ রাজেশ সুরেন্দ্র বাদানি)

Corporate Stress : জেট গতির যুগে বদলে গিয়েছে জীবনশৈলী। এখন কর্পোরেটে বেশি টাকার পাশাপাশি মারাত্মক চাপ নিতে হচ্ছে কর্মীদের। দিনের শেষে যার ফল ভুগছে শরীর। চিকিৎসকরা বলছেন, কর্পোরেটে চাকরিরত পুরুষদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ছে।

অনেক আগেই আসছে বার্ধক্যএকটা সময় ছিল যখন ৫০ বা ৬০ বছর বয়সে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে মানুষ চিন্তিত থাকত। কিন্তু এখন ভারতে কর্পোরেট দুনিয়ায় ৩০ বছর বয়সী পুরুষরা এই ধরনের লক্ষণ দেখাচ্ছে। বেশি চাপের চাকরি, সর্বক্ষণ ইমেল ঘাঁটার মতো পরিস্থিতি তাদের ওপর অদৃশ্য বোঝা চাপিয়ে মারাত্মক ক্ষতি করছে। এগুলি সর্বদা জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করে না। তবে নীরবে একে একে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, ঘুমের অভাব, রক্তচাপ বৃদ্ধির মতো ঘটনা অলক্ষিতে সংকট বাড়াতে থাকে।

অনেক সময় এই চাপই মারাত্মক প্রভাব ফেলে শরীরেদীর্ঘস্থায়ী চাপ শরীরে একটি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। উচ্চ কর্টিসল, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের অভাব ও বসে থাকা রুটিন রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত করে, কোলেস্টেরল বাড়ায় ও হার্টে চাপ সৃষ্টি করে। আজকের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে ৩০-এর কোটার কর্পোরেট চাকরিজীবীদের মেটাবলিক প্রোফাইল, তাদের থেকে ১৫-২০ বছরের বেশি বয়সীদের মতো দেখায়। 

কেন এই বিপদের কথা শোনা যায় নাঅনেক পুরুষ এই দুর্বলতা পুষে রাখে। কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব, আর্থিক চাপ সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলার পরিবর্তে তারা এই প্রেসার নিজেদের মধ্য়েই রেখে দেন। বেশিরভাগই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান না, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও এড়ানো হয়। সুস্থতা মানে কেবল জিমের সদস্যপদ নেওয়া বা কোনও অ্যাপে 'স্টেপ কাউন্টিং' নয়। পুরুষদের এই সুস্থ্যতা আসলে এমন একটি জায়গা, যেখানে তারা নির্দি্বধায় বলতে পারবে 'আমি ঠিক নেই'। তারপরই তারা আসল সাহায্য পাবে।

এই পরিস্থিতি প্রতিরোধে কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন সাপ্তাহিক রুটিনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ১ দিন যোগব্যায়াম বা ফ্লেক্সিবিলিটি প্রশিক্ষণ২ দিন শক্তি বা রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং৩ দিন অ্যারোবিক বা কার্ডিওভাসকুলার কার্যকলাপএই ১-২-৩ পদ্ধতি, সুষম খাদ্য, মানসম্পন্ন ঘুম দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের গতিপথ পুনরায় সেট করতে পারে।

এই ক্ষেত্রে কর্পোরেট কালচারও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। কর্মীদের সুস্থ থাকার জন্য খোলামেলা কথাবার্তা একটা গুরুত্বপূর্ণ উপায়। পাশাপাশি পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য ও ফ্লেক্সিবল শিডিউল দিলে তারাও স্বস্তি বোধ করে।  

(ডাঃ রাজেশ সুরেন্দ্র বাদানি পুনের আদিত্য বিড়লা মেমোরিয়াল হাসপাতালের একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ও ইলেক্ট্রোফিজিওলজিস্ট)