Breastfeeding Problems : সন্তান জন্মের পর থেকেই স্তনদুগ্ধ পান করানো প্রয়োজন। জন্মের পর ৬ টি মাস শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়া কিচ্ছুটি না খাওয়ানোরও পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, মা স্তন দান করতে নানারকম সমস্যায় পড়লেন। কিন্তু কিছুটা সঙ্কোচেই সেই সব সমস্যা সামনে আনেন না মায়েরা। বাচ্চার পেট ভরাতে খাওয়াতে শুরু করে দেন ফর্মুলা মিল্ক। কিন্তু এর ফলে বাচ্চা তাঁর প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও প্রতিরোধ ক্ষমতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। কিন্তু ইদানিং কালে শহরে তৈরি হয়েছে ব্রেস্টফিডিং ক্লিনিক । যেখানে নানা সমস্যা নিয়ে মায়েদের গাইড করেন চিকিৎসকরা। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অগ্নিমিতা গিরি।


তিনি জানালেন, গত ৩০ বছরে ইউরোপের মহিলাদের মধ্যে বাচ্চাদের ব্রেস্টফিড করানোর প্রবণতা বেড়েছে। এতে উপকারও এসেছে হাতে নাতে। বরং আমাদের দেশে এই ট্রেন্ড এতটা পপুলার হয়নি। মা ও সন্তানের শারীরিক সুস্থতা অনেকটাই নির্ভর করে মাতৃদুগ্ধ দান ও পানের উপর।  শুধু তাই নয়, দুজনের ইমোশনাল বন্ডিংও অনেক ক্ষেত্রে এর উপর নির্ভরশীল। বিষয়টির গুরুত্ব অনেকেই বোঝেন না, কিংবা শারীরিক সমস্যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মা সন্তানকে ব্রেস্টফিড করানো বন্ধ করে দেন। এতে যেমন আছে কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা, তেমন কিছু পারিপার্শ্বিক সমস্যাও। সেই বাধাগুলি কাটিয়ে ফেলার বার্তা দিয়ে কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে আছে ল্যাকটেশন ইউনিট। সারাবছরই এখানে স্তনদায়ী মায়েদের কাউন্সেলিং করা হয়। 


স্তন্যপান করানোর ক্ষেত্রে  কোনও সমস্যা হলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার মিডওয়াইফ, স্বাস্থ্য পরিদর্শক বা স্তন্যপান বিশেষজ্ঞের সাহায্য চাওয়া প্রয়োজনীয়। টানা দুধ খাওয়ানোর পর অনেক সময় স্তন ছড়ে যায়। ঘায়ের মতো কষ্ট হয়। স্তনের তবে তা ঠিক সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিলে তার সমাধান হতে পারে।  

স্তনে দুধ আসছে না বলে অনেক মা-ই অভিযোগ করেন। কিন্তু এটা কোনও সমস্যাই নয়। প্রেগন্যান্সির থার্ড ট্রাইমেস্টারে ল্যাকটেশন এক্সপার্টের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। স্তনে দুধ আসা কিন্তু হরমোনের দ্বারা প্রভাবিত। মা ও শিশুর নৈকট্যই মায়ের শরীরে দুধের সঞ্চার করে। অক্সিটোসিন ও প্রোল্যাক্টিন হরমোন ক্ষরণে স্তনের দুধ তৈরি হয়। কোনও মায়ের শরীরে দুধ কম এলেও মাকে চেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে। বারবার শিশুকে দিয়ে দুধ টানাতে হবে। তাতে করেই স্তনে দুধ আসবে। কোলেস্ট্রাম অর্থাৎ সন্তান জন্মের পর প্রথম যে দুধ বের হয়, তা শিশুকে খাওয়ানো আবশ্যিক। সেই সঙ্গে মাকেভাল ভাবে প্রোটিন ডায়েট খেতে হবে। 

স্তনদায়ী মায়েরা কী খাবেন, কী খাবেন না 



  • কফি জাতীয় খাবার খাবেন না। 

  • গরুর দুধ খাবেন না। 

  • প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন। 

  • ধূমপান করবেন না। 


স্তন বৃন্ত ছড়ে যাওয়া, ব্যথা হওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ না আসার সমস্যাগুলি শুরুতেই সমাধান করতে হবে। কিন্তু নিপল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নিপল শিল্ড ব্যবহার করে ব্রেস্ট ফিডিম চালু রাখতে হবে। নিপলের ক্ষত সারাতে বিশেষ অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে সন্তানের ক্ষতিও হয় না।