নয়া দিল্লি: করোনাক্রান্ত মা যদি সন্তানকে বুকের দুধ পান করান তাহলে সন্তান কতটা বিপদের সম্নুখীন হবে তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। তবে নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের আইকাহান স্কুল অফ মেডিসিনের নেতৃত্বে যে গবেষণা হয়েছে সেখানে দেখা গিয়েছে মায়ের বুকের দুধে Secretory Immunoglobulin A এর থেকে মানুষের রক্তে পাওয়া ইমিউনোগ্লোবুলিন জি (আইজিজি) অ্যান্টিবডি অনেকটাই আলাদা। যা শিশুদেহে কার্যকর করছে কোভিড প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিকে। কোভিড টিকার ফলেই এই বিষয়টি সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন।


গবেষণাটি ১৫ তম গ্লোবাল ব্রেস্টফিডিং অ্যান্ড ল্যাকটেশন সিম্পোজিয়ামে উপস্থাপনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রায় ১০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন দেখা যায়। সংক্রমিত মায়ের থেকে স্তন্যপান করলেই সেই প্যাসিভ ইমিউনিটি দেওয়া সম্ভব হয়ে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞান জানায়, ইমিউনোগ্লোবুলিন এ (IgA) শিশুদের শ্বাস -প্রশ্বাস এবং অন্ত্রের নালীর আস্তরণের মধ্যেই লেগে থাকে। দলে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানেই বাধাপ্রাপ্ত হয়। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে স্তন্যপান থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডি মায়ের দেহের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। 


এই গবেষণার জন্য কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ৭৫ শতাংশ মহিলার মাতৃদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। সেখানেই দেখা গিয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে আইজিএ রয়েছে। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে,  সংক্রমণ রোধ করতে সক্ষম। এও দেখা গিয়েছে যে এই মায়েদের দেহে প্রায় ১০ মাস কোভিড প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিগুলি থেকে যাচ্ছে। 


ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন টিকা নেওয়া ৫০ জন মহিলার দেহে এই নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, মডার্না এবং যারা ফাইজার ভ্যাকসিন পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশের দুধে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী আইজিজি অ্যান্টিবডি ছিল। মডার্নার ক্ষেত্রে তা ৭১ শতাংশ এবং ফাইজারের ক্ষেত্রে উপস্থিতি ৫১ শতাংশ। জনসন অ্যান্ড জনসন ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে মাত্র ৩৮ শতাংশ নারীর আইজিজি অ্যান্টিবডি ছিল এবং এঁদের মধ্যে ২৩ শতাংশের দুধে করোনাভাইরাস রোখার আইজিএ অ্যান্টিবডি ছিল।


শিশুদের জন্য, স্তন্যপান তাদের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে তাদের অনাক্রম্যতা উন্নত করতে সহায়তা করে। জন্মের এক ঘন্টার মধ্যে স্তন্যপান এবং জীবনের প্রথম ৬ মাসের জন্য টানা স্তন্যপান খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই বলা হয়েছে।