নয়াদিল্লি: করোনা আবহেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গি, রহস্যজনক জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শতাধিক শিশু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। দিল্লিতে আবার শিশুদের মধ্যে স্ক্রাব টাইফাস ছড়াচ্ছে। দিল্লির দু’টি হাসপাতালে স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে ভর্তি হয়েছে দু’টি শিশু। চাচা নেহরু বাল চিকিৎসালয় এবং আকাশ হেলথকেয়ারে ওই দুই শিশুর চিকিৎসা হচ্ছে।
আকাশ হেলথকেয়ারের পেডিয়াট্রিকস ডিপার্টমেন্টের কনসালট্যান্ট ড. মীনা জে জানিয়েছেন, ‘দু’সপ্তাহ আগে একটি শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়। তার রক্ত পরীক্ষা করে স্ক্রাব টাইফাস ধরা পড়ে। তবে তার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল না। শুধু ওষুধেই সে সুস্থ হয়ে যায়। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
গুরুগ্রামের পরশ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড নিওন্যাটলজি বিভাগের প্রধান ড. মণীশ মানন জানিয়েছেন, ‘শিশুদের মধ্যে এভাবে জ্বর ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এমনকী, শিশুদের মৃত্যুও হতে পারে। মৃত্যুর হার এক থেকে ৫০ শতাংশ হতে পারে। পতঙ্গের মাধ্যমে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পতঙ্গের কামড়ের ফলেই স্ক্রাব টাইফাস ছড়াচ্ছে। তাই সবারই সতর্ক থাকা উচিত।
পিএসআরআই হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ড. বিনীতা সিংহ ট্যান্ডন জানিয়েছেন, ‘পতঙ্ক কামড়ানোর ১০ দিনের মধ্যে স্ক্রাব টাইফাসের লক্ষণ দেখা যায়। জ্বর, সারা শরীরে যন্ত্রণা, মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও হয়। আরও নানারকম সমস্যা হতে পারে।’
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে শিশুদের মধ্যে জ্বর নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিল ওই দুই শিশু। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের রাজমহলে। এই নিয়ে তিন দিনে পাঁচজন শিশুর মৃত্যু হল মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দুই শিশুকে আনা হয়েছিল। সবরকম চেষ্টা করেও তাদের বাঁচানো যায়নি। এখন ১৬৪ জন শিশু মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। শিশুদের চিকিত্সার জন্য গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল টিম।