কলকাতা:  ডায়াবেটিস ! হাই সুগার! ডাক্তার বলেছেন ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে। আর সেই কথা মত নিয়মিত ইঞ্জেকশন নেন আপনি। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক থাকলে তবেই রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে, গবেষকদের দাবি, এবার আর ইঞ্জেকশন নিতে লাগবে না। ইনসুলিন (Insulin) তৈরি হবে শরীরের মধ্যেই। অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক এবার অগ্ন্যাশয়ের স্টেম কোশের মধ্যেই ইনসুলিন পুনরুৎপাদন করার চেষ্টা করছেন। ফলে ধীরে ধীরে কমে যাবে কৃত্রিম ইনসুলিন ইঞ্জেকশনের চাহিদা।


কী গবেষণা হয়েছে?


অস্ট্রেলিয়ার বেকার হার্ট ডিজিজ অ্যান্ড ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে অগ্ন্যাশয়ের সদ্যোজাত ইনসুলিন (Insulin) কোশগুলি বিশেষ কিছু স্টিমুলেটরের সহায়তায় গ্লুকোজের বিপরীতে ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে, তাও আবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। পরে নেচার জার্নালে এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়। সেখানে ৭ থেকে ৬১ বছর বয়সের মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে ইনসুলিন উৎপাদন সম্ভব সেই প্রক্রিয়াও বর্ণনা করা হয়েছে এখানে।


গবেষকরা জানিয়েছেন বর্তমানে যেভাবে ডায়াবেটিস (Diabetes Type 1) নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়, সেখানে কোনওভাবেই ইনসুলিন-উৎপাদনকারী কোশগুলির ধ্বংস বন্ধ করা যায় না। কিংবা ইনসুলিন কোশগুলি পুনরায় জীবিত হয়ে উঠতে পারে না। তবে একইসঙ্গে দেখা গিয়েছে গ্লুকোজ সেন্সিং পদ্ধতির মাধ্যমে ইনসুলিন উৎপাদন করা সম্ভব।


কীভাবে তৈরি হবে ইনসুলিন?


ডায়াবেটিস টাইপ ১-এ (Diabetes Type-1) আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যে কয়টি অগ্ন্যাশয় কোষ অক্ষত আছে সেগুলিকে গ্লুকোজ সেন্সিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফের একবার পুনরুজ্জীবিত করে তোলা যায় যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি টানা একদিন ইনসুলিন ইঞ্জেকশন না নিয়ে থাকতে পারেন অনায়াসে।


সারা বিশ্বে প্রায় ৫৩০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটা ক্রমে ৬৩০ মিলিয়নের কাছাকাছি চলে যাবে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর যারা ইনসুলিন (Insulin) ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেই ডায়াবেটিসের প্রতিকারের চেষ্টা করছেন, তাদের কাছে এই গবেষণার ফল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।


কী জানিয়েছেন গবেষকরা?


গবেষকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, নষ্ট হয়ে যাওয়া অগ্ন্যাশয় কোশ থেকে পুনরায় ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য মাত্র ৪৮ ঘণ্টা ধরে গ্লুকোজ স্টিমুলেশনই (Glucose Stimulation) যথেষ্ট। এর পরে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকে একটি প্রি-ক্লিনিক্যাল মডেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। আর এই স্টিমুলেটরগুলিকেই যাতে পরে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন করা যায় সেই কাজে নিয়োজিত গবেষকদের দল।


আরও পড়ুন: Pea: শুধুই পুষ্টিগুণ? নাকি ক্ষতিও! শীতে অতিরিক্ত কড়াইশুঁটি খেয়ে ভুল করছেন না তো?