কলকাতা: কড়াইশুঁটির (Peas) কচুরি থেকে পিঠে, তরকারির উপাদান হোক, বা মুখরোচক কোনও পদ। শীতের (Winter) মরশুমে অন্যতম সঙ্গী হল কড়াইশুঁটি। তারপর তো ডাল, পোলাও রয়েছেই। তবে শুধু স্বাদেই নয়, অনেকে বলেন পুষ্টিগুণেও ভরপুর এটি। কিন্তু শুধুই কি গুণ? নাকি কোনও বাজে দিকও রয়েছে কড়াইশুঁটি খাওয়ার? অতিরিক্ত কড়াইশুঁটি খেলে কি কোনও সমস্যা হতে পারে? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
কী গুণ রয়েছে শীতের কড়াইশুঁটির?
কড়াইশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে। শীতের নানান রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে সাহায্যও করে এটি।
এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল আছে। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ২ মিলিগ্রাম পলিফেলনসমৃদ্ধ খাবার খেলে পাকস্থলি ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। আর এক কাপ মটরশুঁটিতে অন্তত ১০ মিলিগ্রাম পলিফেলন থাকে।
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
কড়াইশুঁটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
এতে রয়েছে একাধিক ভিটামিন। যেমন বি১, বি২, বি৩ এবং বি৬-এর দারুণ উৎস কড়াইশুঁটি। এটি শরীরের হোমোসাইস্টাইন লেভেল কমায়। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সহায়তা করে।
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় কড়াইশুঁটি কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের নানা সমস্যা দূর করে এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
এক কাপ মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে যা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। এতে হাড় মজবুত হয়।
শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও দারুণ ভূমিকা রাখে কড়াইশুঁটি।
এছাড়াও এতে আছে কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ফসফরাস, জিঙ্ক, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স।
তবে কোনও কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ভাল নয়। এর অত্যধিক সেবন স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। এতে হজমের সমস্যা এবং আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যাঁদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। তাঁরা অবশ্যই এড়িয়ে চলুন এটি।
কড়াইশুঁটি রয়েছে ভিটামিন কে। এটি শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে গেলে তা রক্তকে পাতলা করে দেয় পাশাপাশি রক্তে প্লেটলেটও কমিয়ে দিতে পারে। এটি ক্ষত নিরাময় এবং দ্রুত টিস্যু মেরামতকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যাঁদের পাকস্থলীতে আলসার, রক্ত জমাট বাঁধা, থ্রম্বোফ্লেবিটিসের মতো সমস্যা আছে তাঁরা অতিরিক্ত কড়াইশুঁটি খাওয়া তাঁরা এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও ডায়রিয়ার সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে কড়াইশুঁটি।