কলকাতা: ডিজিটাল দুনিয়া ছাড়া এখন আর জীবন কল্পনা করা যায় না। উঠতে বসতে শুতে শুতেও আমাদের একান্ত সঙ্গী মোবাইল ফোন। সেই মোবাইলের জেরে অবশ্য শরীর খারাপের আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। শুধু মাত্র মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে একাধিক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।


ফোন ঘাঁটার কারণে কী কী রোগের আশঙ্কা ?


শারীরিক সমস্যা



  • শারীরিক সমস্যার মধ্যে ঘুমের সমস্যা অন্যতম। রোজ যে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার, তার অনেকটাই কেড়ে নেয় মোবাইল ফোন।

  • চোখের ক্ষতি করে মোবাইল ফোনের ব্লু লাইট। এই ধরনের লাইট রেটিনার পক্ষে ক্ষতিকর। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ঘাঁটার ফলে চোখ জ্বালা, চোখ থেকে জল পড়তে থাকে। এমনকি  দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে।

  • দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ঘাঁটার ফলে ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে। মোবাইলের কারণে হয় বলে বিশেষজ্ঞরা একে টেক্সট নেক সিনড্রোম নাম দিয়েছেন।


মানসিক সমস্যা



  • তরুণ কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে সমীক্ষা করে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের হদিস পেয়েছেন মনোরোগ চিকিৎসকরা।

  • মনোবিদদের কথায়, দীর্ঘক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ার কাটানোর ফলে ব্যক্তির মধ্যে অবসাদ দেখা দিতে থাকে। 

  • এছাড়াও অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার দেখা দিতে পারে। যাকে আমরা বাংলায় বাতিকের রোগ বলে থাকি।

  • সম্পর্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাস্তবে আমরা যেই জগতে রয়েছি, সেখানের মানুষগুলির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।


তবে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটির পরও নিজেকে সুস্থ রাখা যায়। এর জন্য মোবাইল বা ল্যাপটপের পিছনে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি খরচ করা যাবে না। কোন বয়সে কতটা সময় মোবাইল বা ল্যাপটপের পিছনে খরচ করা উচিত, তা নিয়ে  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নির্দেশিকাও রয়েছে।


কতক্ষণ ফোন ঘাঁটা নিরাপদ ?



  • ১ বছরের কম: কোনও স্ক্রিনটাইম থাকা উচিত নয়। খুব প্রয়োজন হলে একসঙ্গে এক ঘন্টার বেশিক্ষণ স্ক্রিনটাইম ক্ষতিকর।

  • ১-২ বছর: এক থেকে দুই বছরের শিশুদের জন্যও একই পরামর্শ হু-এর। 

  • ৩-৪ বছর: এই বছরের শিশুদের জন্য একসঙ্গে এক ঘন্টার বেশি ফোন বা স্ক্রিন না ঘাঁটার পরামর্শ দিচ্ছে হু।

  • ৫-১৭ বছর: এই শিশু ও কিশোরদের দিনে দুই ঘন্টার বেশি মোবাইল বা স্ক্রিনের সামনে থাকা উচিত নয় বলে জানাচ্ছে হু।

  • ১৮ বছরের বেশি: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই দুই ঘন্টা স্ক্রিনটাইমের পরামর্শ হু-এর।


বাস্তব অবশ্য অন্যরকম !


তবে  এ তো গেল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। আসল চিত্রটা আদতে অন্যরকম। ২০২৩ সালের একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে তরুণদের স্ক্রিনটাইম দৈনিক ৭ ঘন্টা ৭ মিনিট। গোটা একটা সপ্তাহ জুড়ে তরুণদের স্ক্রিনটাইম মোট ৪৯ ঘন্টা ৭ মিনিট। ডিসিডিএক্স-এর ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বের গড় স্ক্রিনটাইমের থেকে জেন জেড তরুণদের স্ক্রিনটাইম  ১০৪ শতাংশ বেশি। কাজের জন্যই ফোনের পিছনের দিনের বড় সময় চলে যাচ্ছে, তেমনটাও নয়। বরং সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ তরুণ ইনস্টগ্রাম, ইউটিউব ও টিকটকে বেশি সময় কাটাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মেসেজিং অ্যাপের পিছনেও অনেকটা সময় যাচ্ছে।


আরও পড়ুন - Weight Loss: ভাত খাওয়া ছাড়তে হবে না, শুধু এভাবে খান ! ঝটপট ওজন ঝরবে