নয়াদিল্লি: কোভিডের পর এবার মাঙ্কিপক্স (Monkeypox) নিয়ে উদ্বেগ বিশ্বজুড়ে। এখনও পর্যন্ত ২০টি দেশে হদিশ মিলেছে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের। জানানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে (World Health Organisation)। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২০০টি সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। এখনও পর্যন্ত এমন ১০০টি ঘটনার কথা জানা গিয়েছে, যাকে মাঙ্কিপক্স বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সেগুলি এমন দেশে পাওয়া গিয়েছে, যেখানে সাধারণত মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের দেখা পাওয়া যায় না। সেই কারণেই বেড়েছে উদ্বেগ, শুক্রবার এমনটাই জানানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে। 


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organisation) কোভিড-১৯ টেকনিক্যাল হেড (technical Head) মারিয়া ভন কেরখোভ (Maria Van Kerkhove) জানিয়েছেন, আরও বেশি নজরদারি শুরু করলে আরও বেশি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসবে। যদিও এই সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি। দেশগুলিকে আরও বেশি করে নজরদারি করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। 


সংক্রমণের হদিশ:
ইংলন্ডে (UK) ৭ মে প্রথম মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসে। তারপর থেকে উত্তর আমেরিকা (North America) ও ইউরোপের (Europe) একের পর এক দেশে সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। যদিও কোনও মৃত্যুর খবর এখনও নেই।


ইউরোপের ছবি:
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (EU) তরফে জানানো হয়েছে, সেখানে এখনও পর্যন্ত ১১৮টি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা গিয়েছে পর্তুগাল (Portugal) ও স্পেনে (Spain)।     


আমেরিকা ও কানাডায় সংক্রমণ:
আমেরিকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে সেখানে সাতটি প্রদেশে মোট ৯টি সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে অনেকেই সংক্রমিত দেশগুলিতে যাননি। ফলে কীভাবে সংক্রমণ ছড়ানো তা নিয়ে উদ্বেগে আমেরিকার প্রশাসন। একইসঙ্গে কানাডাতেও ১৬টি সংক্রমণের খবর মিলেছে। 


কীভাবে সংক্রমণ?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত পশুদের কামড় থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এছাড়াও, আক্রান্ত পশুদের রক্ত, লোম, রক্তরস থেকেও ছড়াতে পারে। এমনকি আক্রান্ত পশুর মাংস সঠিক পদ্ধতি মেনে রান্না না করে খেলেও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির পোশাক, বিছানা, তোয়ালে থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে মাঙ্কি পক্স ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাসের মতোও হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।


মাঙ্কি পক্সের লক্ষণ:
জ্বর, গায়ে ব্যথা, আকারে বড় বসন্তের মতো গায়ে গুটি গজিয়ে ওঠাকে আপাতত মাঙ্কি পক্সের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফোস্কার মতো দেখতে যন্ত্রণাদায়ক গুটি হাতে, পায়ে এবং মুখে গজিয়ে উঠতে দেখলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে। মাঙ্কি পক্সের একটি রূপ এতটাই ভয়ঙ্কর যে, আক্রান্তদের ১০ শতাংশ তাতে মারাও যেতে পারেন। এছাড়াও, মাথার যন্ত্রণা, পেশিতে যন্ত্রণার সমস্যাও লক্ষণ হিসেবে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাঙ্কি পক্সের সমস্যা দুই থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে, এই অসুখের উপসর্গ দেখা দেওয়ার দিন কয়েক পরই শরীরের নানা অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।


আরও পড়ুন: একাধিকবার জামিন খারিজ, শেষমেশ ক্লিনচিট আরিয়ানকে ; টাইমলাইনে কর্ডেলিয়া ক্রুজ মাদক মামলা