নয়াদিল্লি: একটি রেস্তরাঁ থেকে শাওয়ারমা খেয়েছিল কেরলের (Kerala) এক কিশোরী। তারপরেই ঘোরতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। শেষ পর্যন্ত মারা যায় ওই কিশোরী। একই খাবার খাওয়ায় তিরিশ জনকে হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে হয়। ঘটনাস্থল কেরলের কাসারগোড়। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছিল খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে এমন ঘটনা হয়েছে। পরে কেরলের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়, খাবারে বিষক্রিয়ার পিছনে দায়ী ছিল একটি ব্যাকটেরিয়া। যার নাম শিগেলা।  
 
কীভাবে  এল এই ব্যাকটেরিয়া: 
সংবাদ সূত্রের খবর, সম্প্রতি কাসারগোড়ের চেরুভাথুরের একটি খাবারের দোকান থেকে এর সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অসুস্থ লোকদের রক্ত ​​এবং মলে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে। পুলিশ হোটেলের মালিক ও কর্মচারীকে আটক করেছে। কেরল হাইকোর্ট ঘটনাটি নিয়ে কেরল সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছে।


শিগেলা ব্যাকটেরিয়া (Shigella Bacteria) কি?
পেট খারাপ বা ডায়রিয়া সংক্রমণের পিছনে যে য়ে ব্যাকটেরিয়া থাকে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান এই ব্যাকটেরিয়া। মানবদেহের অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম এই প্রজাতির ব্য়াকটেরিয়া।  এন্ট্রোব্যাকটর গোত্রের ব্য়াকটেরিয়া থেকে এই ধরনের সংক্রমণ ঘটতে পারে। যদিও ওই গোত্রের অন্তর্গত সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম নয়। 


কীভাবে সংক্রমণ? কোথায় ক্ষতি?
মূলত মল-মূত্রের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়। কলেরার মতোই খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। জলের মাধ্যমে ছড়ায় সংক্রমণ। ব্যাকটেরিয়া রয়েছে এমন জলে সাঁতার কাটলে বা স্নান করলেও সংক্রমণ হতে পারে। অন্ত্রে হামলার করে শিগেলা ব্য়াকটেরিয়া (Shigella Bacteria)। প্রবল পেটব্য়াথা, জ্বর এবং ডায়রিয়া (Diarrhoea ) উপসর্গ দেখ যায় আক্রান্তের মধ্যে। এছাড়াও টানা বমি এবং মলে রক্তপাতের উপসর্গও দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, খুব সামান্য পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া ভয়াবহ সংক্রমণ ঘটাতে পারে। 


সংক্রমণের হার:
খুব বেশি শিগেলা সংক্রমণ দেখা যায় না। খুব সামান্য পরিমাণেই দেখা যায়। কিন্তু এর সংক্রমণ বেশ গুরুতর হয়ে থাকে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়ার (Bacteria) সংক্রমণ গুরুতর হয়ে থাকে।


কাদের বেশ বিপদ:
প্রসূতি ও গর্ভবতী, পাঁচ বছর বয়সের নীচে শিশু এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ রয়েছে এমন কারও এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।


মৃত্যুর হার:
সংক্রমণ ভয়াবহ হলেও মৃত্যুর হার খুব বেশি নয়। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে পারে। এছাড়াও, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনায় দুর্বল তাঁদের ক্ষেত্রে বিপদ থাকে। এই কারণেই ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা গেলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন।


সতর্কতা থাকলেই এড়াবে বিপদ:
খাবার ও জলে (Water) নজর রাখা এই সংক্রমণ দূরে রাখার প্রাথমিক শর্ত। ভালভাবে হাত ধোয়া এবং পরিস্রুত পানীয় জল খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও, গরমের সময় দুধ, মাংস, মাছের মতো সামগ্রী যাতে নষ্ট না হয় সেখানেও নজর রাখা প্রয়োজন। বিন্দুমাত্র পচে গেলে তা ফেলে দেওয়া উচিত।


আরও পড়ুন: অবসাদ? বিষণ্ণতা? খেয়াল রাখুন হার্টের দিকে