কলকাতা : লিভার দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এর কাজ হল দেহে খাবারের সঙ্গে প্রবেশ করা  অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলিকে বর্জ্যে রূপান্তরিত করা। যে বর্জ্য পরে মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়। লিভারের উপরই নির্ভর করে দেহ থেকে বর্জ্যপদার্থ ঠিক মতো বের হওয়ার বিষয়টি। লিভার ঠিক মতো কাজ না করলে এই প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয়। এছাড়াও খাদ্যের সঙ্গে আমাদের দেহে যে ফ্যাট প্রবেশ করে , তা পরিপাকে সাহায্য করে লিভার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লিভারে নানা সমস্যা যেমন আসতে পারে, তেমনই খুব কম বয়সেও লিভারের সমস্যা হয়। সেগুলি কোনও কোনওটি জিনগত, কোনওটি আবার হঠাৎ করেই উদ্ভূত সমস্যা। আলোচনায় ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার। মনে রাখতে হবে 



  • লিভার খাবার হজম করতে সাহায্য করে

  • লিভার বাইল উৎপন্ন করে পরিপাকে সাহায্য করে।

  • ফ্যাট পরিপাকে সাহায্য করে।

  • বিলিরুভিন তৈরিতে সাহায্য করে।

  • বর্জ্য বের করে দিতে সাহায্য করে।

  • লিভারই মূলত চর্বি হজমের কাজ করে। আর যখন এটি ঠিক মতো কাজ করবে না তখন চর্বিগুলো অন্ত্র থেকে পিত্ত হয়ে ফের লিভারে এসে জমা হবে।

    ছোটদের ক্ষেত্রে লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে কী কী ঘটতে পারে ...


  • ফ্যাট পরিপাক হয় না।

  • বর্জ্য পদার্থ গুলি ঠিক মতো বের হতে না পেরে অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ঘায়েল করে। 

  • বিলিরুভিন বেড়ে যায়। 

  • লিভার আকারে বেড়ে যায়।

  • প্রস্রাব ও মলের রং বদলে যায়।

  • সাদা বা ছাইছাই রঙের মল হতে পারে। 

  • সারা গায়ে গুটিগুটি হতে পারে।

  • ওজন কমে যায়।

  • সারা দিন ক্লান্তি

  • বমি ভাব

  • রক্ত বমিও হতে পারে খুব খারাপ অবস্থায়।

  • লিভার ভালো থাকলে তা অনেক অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে ধ্বংস করে। কিন্তু লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেলে দেহ ওই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে আটকাতে পারে না।


শিশুর লিভারের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় কী কী কারণে - 



  • জিনগত কারণে লিভারের নানা সমস্যা হয়।  এনজাইমের ঘাটতি হয়। একধরনের সিস্ট দেখা দিতে পারে

  • মেটাবলিক ডিজঅর়্ডার থাকতে পারে

  • লিভারে ইনফেকশন হতে পারে। এরমধ্যে শিশুদের ক্ষেত্রে কমন, হেপাটাইটিস এ, বি, সি ,ডি, ই। হেপাটাইটিস বি ও সি থেকে ক্রনিক হেপাটাইটিস হতে পারে।

  • লিভারে প্রদাহ থেকেও সমস্যা হয়। 

  • লিভারে টিউমারও হতে পারে। তার মধ্যে কোনও কোনওটি ম্যালিগন্যান্ট হয়।

  • মনে রাখতে হবে, সিরোসিস অফ লিভার কিন্তু শিশুদেরও হয়। সেক্ষেত্রে সমস্যাটা কিছুটা জিনগত বা জন্মগত। 


কী কী পরীক্ষা করা হতে পারে লিভার সুস্থ আছে কি না জানতে - 



  • রক্ত পরীক্ষা

  • লিভার ফাংশন টেস্ট - বিলিরুভিনের মাত্রা জানা যায়। লিভারের বিভিন্ন এনজাইম বেড়েছে কি না দেখা যায়। 

  • সিটি স্ক্যান

  • এমআরআই

  • প্রয়োজনে বায়োপসি

  • মনে রাখতে হবে অসুখের লক্ষণ অনুসারে চিকিৎসা করা হয়। প্রয়োজনে সার্জারিও করা হয়। লিভার কিন্তু ওষুধ দিলে সাথে সাথে সুস্থ করা যায় না। 

  • খাদ্য তালিকা ও জীবন শৈলিতে পরিবর্তন জরুরি লিভার সুস্থ রাখতে