কলকাতা: তামাকাজাত দ্রব্যের প্যাকেটে তো বটেই, সিনেমা-থিয়েটারেরও শুরুতেও ধূমপানবিরোধী সচেতনতা প্রচার চলে। সরকারি- বেসরকারি স্তরে আরও নানা ভাবে চলে প্রচার। কারণ ভারতের ক্ষেত্রের তামাকজাত (Tobacco) দ্রব্যের ব্যবহার এবং তা থেকে মৃত্যুর ঘটনা আকাশছোঁয়া। তথ্য বলছে ভারতের জনগণের প্রায় ৩৫ শতাংশ ধূমপায়ী। ধূমপানের জন্য প্রতিবছর ভারতে অন্তত ১০ লক্ষ লোক মারা যান বলেও দাবি।
মৃত্যুর আঁচ:
নন কমিউনিকেবল ডিজিজ (Non Communicable Disease)-এর মতো রোগও হয় ধূমপানের অভ্যাস থেকে। তথ্য বলছে ভারতে প্রতিবছর যত মৃত্যু হয় তার অর্ধেক এই ধরনের রোগ যেমন ক্যানসার ও হার্টের রোগের জন্য হয়ে থাকে।
চোখেও বিপদ:
নিয়মিত ধূমপানের (Smoking) অভ্যাসের জন্য ক্যানসার (Cancer), হার্টের সমস্যা, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যে হয়ে থাকে তা অধিকাংশ মানুষই জানেন। কিন্তু চোখ নিয়ে সচেতন নন অনেকেই।
কতটা ক্ষতি:
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ধূমপানের মাধ্যমে তামাকের ক্ষতিকর পদার্থ মানবদেহের রক্তে মিশে যায়। যা শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, ক্ষতি করে চোখেরও। কোনও একটি বিশেষ রোগ নয়, সামগ্রিক ভাবে চোখের স্বাস্থ্যের এতটাই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে যে একাধিক দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ড্রাই আই (dry eye) , ক্যাটারাক্ট বা ছানি (cataract) হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (diabetic retinopathy) এবং অপটিক নার্ভের সমস্যা হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চোখের এই সমস্যাগুলি বাড়াবড়ি হলে এবং ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এছাড়াও চোখের আরও দুটি সমস্যা হয়ে পারে অত্যধিক অথবা দীর্ঘদিনের ধূমপানের অভ্যাসে।
এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (Age Related Macular Degeneration): সাধারণত বয়স হলে এই সমস্যা হয়, তবে ধূমপানের অভ্যেস থাকলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে central vission নষ্ট হতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলে যেতে পারে দৃষ্টিশক্তিও। এটি দুইরকম হয়, ড্রাই(dry) ও ওয়েট (wet)
গ্লুকোমা (Glaucoma): চোখের একাধিক সমস্যাকে একসঙ্গে গ্লুকোমা বলে। চোখের ভিতরে জলীয় পদার্থ জমে এই অবস্থা হতে পারে। যার ফলে ক্ষতি হয় অপটিক নার্ভের। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ধূমপানের অভ্যাস যত বেশি থাকে, তত বেশি করে গ্লুকোমার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
দূরে থাকুক বিপদ:
সুস্থ থাকতে ধূমপান বন্ধ করতেই হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যাঁরা ধূমপান ছেড়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনের জোর বাড়াতে হবে। ধূমপান বন্ধের সঙ্গেই পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে ডায়েটে। আরও একটি বিষয় খুব প্রয়োজনীয়। সেটা হল স্ক্রিন টাইম (Screen Time) কমানো। কাজের প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল বা ল্যাপটপ যতটা কম ব্যবহার করা যায় ততই ভাল।
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।