নয়াদিল্লি: সারা রাত না ঘুমিয়ে দিনের বেলায় কয়েক ঘণ্টার হাল্কা ঘুম, যাকে বলে 'শর্ট ন্যাপ' নেওয়ার অভ্যাস আছে? কিন্তু গোটা দিনের বিভিন্ন সময়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঘুম কখনওই সারা রাতের ঘুমের পরিপূরক হতে পারে না, বলছে সম্প্রতি মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির 'স্লিপ অ্যান্ড লার্নিং ল্যাব' প্রকাশিত এক সমীক্ষা। 


মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর কিম্বার্লি ফেন জানান, 'পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের ফলে মানুষের মস্তিষ্কে বা শরীরে কী কী সমস্যা হতে পারে তা জানার চেষ্টা করছিলাম আমরা। এই সমীক্ষায় জানার চেষ্টা করেছি যে ঘুমের ঘাটতির এই সময়ে অল্প ঘুম সেই সমস্যাগুলির সমাধান করতে পারে কিনা।'


তিনি আরও জানান, '৩০ মিনিট বা ৬০ মিনিট ঘুম বিশেষ প্রভাব ফেলে না শরীরে।' কিন্তু ব্যস্ত শিডিউলের চাপে বেশিরভাগ মানুষই 'শর্ট ন্যাপ' নিয়ে থাকেন। যদিও 'শর্ট ন্যাপ' বিশেষ প্রভাব ফেলে না, কিন্তু দেখা গেছে ন্যাপ নেওয়ার সময়ে প্রতিযোগীরা যে 'স্লো ওয়েভ স্লিপ' সংগ্রহ করেছে তা বেশ প্রভাবশালী। 


এই 'স্লো ওয়েভ স্লিপ' বা SWS হচ্ছে ঘুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, জানাচ্ছেন ফেন। 'যখন কেউ বেশ কিছুদিন না ঘুমিয়ে কাটান, তখন দিনের বেলাতেও তাঁদের ঘুমের প্রয়োজন পড়ে; নির্দিষ্ট করে বললে তাঁদের SWS-এর দরকার পড়ে। যখন একজন রাতে ঘুমোতে যান, তখন তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে SWS-এ ঢুকে পড়েন এবং একটা পর্যাপ্ত সময় এই অবস্থায় কাটান।'


SWS সবচেয়ে গভীর ঘুমের সময়। ঘুমের এই সময়ে একজন ব্যক্তির শরীর সবচেয়ে রিল্যাক্সড অর্থাৎ হালকা থাকে, শরীরের সমস্ত পেশি শিথিল থাকে, এবং হৃদকম্পন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সবচেয়ে কম থাকে।


প্রায় ২৭৫ জন কলেজ পড়ুয়ার ওপর এই সমীক্ষাটি করা হয়। তাঁদের তিনটি দলে ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রথম দলকে বাড়িতে ঘুমোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দলকে ল্যাবেরটরিতে রেখে ৩০ মিনিট বা ৬০ মিনিটের জন্য ঘুমোতে হয় এবং তৃতীয় দলকে একেবারেই ঘুমোতে দেওয়া হয়নি। 


পরদিন সকালে তাঁদের সকলকে ল্যাবে পুনরায় ডাকা হয়। এরপর তাঁদের ওপর নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। সেই পরীক্ষার ফল দেখেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষাটি করার উদ্দেশ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বোঝানো।