ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে দেশ। এই অবস্থায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে। তার থেকেও উদ্বেগের বিষয় হল, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে, শিশুদের ক্ষেত্রে তুলনায় আগের থেকে বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেছিলেন, ভ্যাকসিনেশন তো করা হচ্ছে ১৮-র বেশি। শিশুদের টিকাকরণ হচ্ছে না। তাই শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ঢেউয়ে কম, দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশি হচ্ছে। তৃতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই আশঙ্কা।


বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। রাজ্য সরকারের নথি অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের ৫.৮ শতাংশ শিশু। তারমধ্যে যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে তাদের মধ্যে আবার ৮ থেকে ২০ শতাংশের চিকিত্‍সায় আইসিইউয়ের প্রয়োজন হচ্ছে।
 
শুধু তাই নয়, এরমধ্যে সংখ্যায় কম হলেও কিছু রোগী অতি সঙ্কটজনক হয়ে যাচ্ছে। উদ্বেগ এখানেই শেষ নয়। চিকিত্‍সকদের দাবি, প্রথম ওয়েভের সময় ১২ বছর বয়স পর্যন্ত যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছিল, তাদের মধ্যে একটি বিশেষ ধরনের রোগ দেখা যাচ্ছিল। যাকে চিকিত্‍সার পরিভাষায় বলে, মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম। যার উপসর্গ অনেকটা কাওয়াসাকি ডিজিজের মতো। 


চিকিত্‍সকদের দাবি, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। ইতিমধ্যেই পার্ক সার্কাসের শিশু হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় গাইডলাইনও প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। শিশুদের করোনা সংক্রমণকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মাইল্ড অর্থাৎ, মৃদু উপসর্গ থাকলে বাড়িতেই শিশুদের চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মডারেট, সিভিয়ার ও ক্রিটিকাল অবস্থার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এরমধ্যে, উপসর্গ সিভিয়ার ও ক্রিটিকাল হলে আইসিইউতে ভর্তি করতে হবে।


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেছেন, 'জাপানে ইতিমধ্যে ফোর্থ ওয়েভ চলছে। এগুলো চলবেই। শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। থার্ড ওয়েভে আরও বেশি হবে। শিশুদের চিকিত্‍সা পরিকাঠামো দেখতে হবে। তাদের বিষয়ে কম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।


আশার কথা, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২-১৮ বছর বয়সীদের জন্য ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ছাড়পত্র পেয়েছে ভারত বায়োটেক। এই ট্রায়াল সফলভাবে সম্পূর্ণ হলে অপ্রাপ্তবয়ষ্করাও ‘কোভ্যাক্সিন’ নিতে পারবে। ফলে ঝুঁকি কমবে করোনা আক্রান্ত শিশুদের।