World Liver Day 2022: পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় লিভার। খাদ্যে মূলত ৬ রকমের পুষ্টি উপকরণ থেকে থাকে। কার্বোহাইড্রেট, শর্করা , প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন , মিনারেল ও জল। ক্ষুদ্রান্ত্রের ইলিয়ামে (ileum intestine) এই ছ'টি জিনিস পরিপাকের পর শোষণ হয়। তারপর তা একটি সার্কুলেশনে যায়। যাকে পোর্টাল সার্কুলেশন হয়। পোর্টাল ভেইনের মারফত এই খাবারগুলো লিভারে পৌঁছায়। লিভারই এই খাদ্যকে বিভিন্ন দিকে চালিত করে। শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে প্রোটিন বা ফ্যাট থেকে শর্করা তৈরি করতে পারে লিভার। গ্লুকোনিওজেনেসিস (gluconeogenesis) বলে। গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে, গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন হিসেবে স্টোর করে লিভার।
ফ্যাটের পরিমাণ বাড়লে লিভার ফ্যাট নিজের মধ্যে স্টোর করতে পারে। যদি অতিরিক্তি ফ্যাট আসে লিভারে, তখন তার কিছুটা জমা হয় লিভারে, কিছুটা শরীরের অন্যান্য অঙ্গে স্থান পায়। তাতে একজন মানুষ স্থূলকায় হয়ে পড়েন। লিভারের অধিকাংশ কোষ যদি ফ্যাটের স্টোর হয়ে যায়, তখনই তাকে ফ্যাটি লিভার সিনড্রোম বলা হয়ে থাকে। এই অসুখের শুরু থেকেই যদি চিকিৎসা না হয়, তাহলে পরবর্তীতে বড় সমস্যা হতে পারে।
মনে রাখবেন -
- ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ফেলে রাখলে, সুগার, কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার ইত্যাদির সমস্যা বাড়ে।
- হার্টের অসুখ হতে পারে।
- কিডনির অসুখও হতে পারে। আনুসঙ্গিক অসুখও হতে পারে।
- উপসর্গ দেখলেই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট দেখান।
- ফ্যাটিলিভার পরিমাপ করার জন্য ফাইব্রোস্ক্যান বা ইলাস্ট্রোগ্রাফি ( Fibroscan বা Transient Elastography) করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
- ফ্যাটি লিভারের সমস্যা স্টেজ ওয়ান ও টু তে থাকলে তা এক্সারসাইজ ও ডায়েটের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায়।
- আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলে কিন্তু ফাইব্রোসিসও হতে পারে।
- দীর্ঘমেয়াদি ফ্যাটি লিভার রোগীর কিন্তু আরও বড় সমস্যা হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার এড়াতে কী খাবেন, কী খাবেন না
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ড. অনন্যা ভৌমিক জানালেন , এই অসুখের ক্ষেত্রে ডায়েট ও জীবন শৈলির দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি । খাবার সময় খেয়াল রাখতে হবে - - রিফাইনড সুগার এড়িয়ে চলতে হবে
- রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ ময়দা এড়িয়ে চলতে হবে।
- চিনি এড়িয়ে চলুন
- চকোলেট , পেস্ট্রি বাদ রাখুন
- ঘি, মাখন, ডালদা, মার্জারিন এড়িয়ে চলতে হবে
- অ্যালকোহল কমিয়ে আনতে হবে ।
- সবুজ শাকসবজি খেতে হবে ।
- ফাইবার রিচ খাবার খেতে হবে।
- নানারকম ডাল খেতে পারেন ।
- নানা ধরনের বাদাম বা বাদাম থেকে তৈরি বাটার খেতে পারেন। যেমন পি-নাট বাটার ।
- ওটস , আটা, মাল্টিগ্রন আটা খেতে পারেন।
- রান্নায় হলুদ ও আদা থাকলে ভাল।
- পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন।
- গ্রেড টু ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে পার্সোনালাইজড ডায়েট চার্ট দরকার।
- লিভার সুস্থ রাখতে এই ঘরোয়া টোটকাগুলিও ট্রাই করা যেতে পারে।
- সরষের তেলে রান্নার পরিবর্তে, সামান্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
- রসুন, গাজর, সবুজ শাকবব্জি, আপেল, আখরোট ইত্যাদি খেতে পারেন।
- লেবু, লেবুর রস এবং গ্রিন টি লিভারের পক্ষে উপকারী।
- ময়দার বদলে বাজরার রুটি খান। হাতে গড়া আটার রুটি খেতে পারেন।
- বাঁধাকপি, ব্রোকলি এবং ফুলকপির মতো সবজি থাকুক আপনার পাতে।
- খাবারে হলুদ ব্যবহার করলে ভালো হবে।
- রোজ সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়া উপকারী ।