কলকাতা : বিপদ কখনও বলে আসে না। লোক দেখেও আসে না। ইদানীং কালে ট্রেন্ড বলছে বয়স দেখেও আসে না। ৩০ বছর বয়সের পর থেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ইদানীং চোখে পড়ার মতো বেড়েছে।  তাই চিকিৎসকরা বলছেন, সময় থাকতে সাবধান হোন। শরীর নিয়ে অবহেলা করবেন না। 



  • অফিসে বসের দেওয়া টার্গেটে পর্যুদস্ত ? 

  • মাসের শুরুতে ফ্ল্যাটের ইএমআই?

  • সন্তানের স্কুলের ফিজ, সংসার খরচের চাপে নুয়ে পড়ছেন মনে হচ্ছে? 

  • রাতের ঘুম কেড়েছে টেনশনের সাঁড়াশি আক্রমণ ? 

  • এরমধ্যে কি ভুলেই গেছেন বছরে একবার প্রেসার-সুগার টেস্ট করাতেও ? 


  • তিরিশের কোঠায় পা রাখলেই ঘাড়ে চেপে বসে এমন নানাবিধ চাপের পাহাড়। অনেকের মতো আপনিও হয়তো ভাবেন, এটাই তো পায়ের তলার মাটি শক্ত করার সময়, সঞ্চয় করার সময়! এই বয়সে কী আর হবে! কিন্তু, আপনার এই ভাবনা যে কতটা ভুল জানেন কি?  সমীক্ষা বলছে, ৩০-৩৫ বছর বয়সের পর থেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে।  এর কারণগুলি কী কী, জানাচ্ছেন অভিজ্ঞ চিকিৎসক   ডা. অলোক পণ্ডিত (Dr. Alak Pandit  DM(Neurology)  Professor Neurology     Bangur Institute Of Neuroscience)


  • টেনশন

  • রক্তের উচ্চচাপের চিকিৎসা না হওয়া 

  • ডায়াবেটিসের চোরা আক্রমণ 

  • কোলেস্টেরল, লিপিড প্রোফাইল চেক না করা

  • ইসিজি না করা 
    এর ফলেই বাড়ছে ব্রেন স্ট্রোকের প্রবণতা ।

    স্ট্রোক কী ?

  • স্ট্রোক মানে মস্তিষ্কের কোনও অংশে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে সেই অংশে আর অক্সিজেন পৌঁছোয় না। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের সেই অংশের কোষগুলির মৃত্যু হয়। আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ কোনও না কোনও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও অংশের কোষের মৃত্যু হলে, সেই অংশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কাজ করার ক্ষমতা চলে যায়। সেটা সামান্য হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া থেকে সম্পূর্ণ পঙ্গুত্ব পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসায় দেরি হলে স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত বের করে আনার পদ্ধতিও জটিল হয়ে পড়ে। কোনও কোনও সময় তা হাতের বাইরেও বেরিয়ে যায়। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোকের পর প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ১ ঘণ্টার মধ্যেই যদি হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে মস্তিষ্কের ক্ষতি অনেকটাই আটকানো সম্ভব। এই সময়টাকে বলে The Golden Hour ! 

    স্ট্রোক কত রকমের ?  ডা. অলোক পণ্ডিত জানালেন , 

  • ইসকেমিক স্ট্রোক ( Ischemic Stroke )

  • হ্যামারেজিক স্ট্রোক , (Hemorrhagic Stroke)

  • ট্রানজিট ইসকেমিক স্ট্রোক (Transient Ischemic Attack - Mini-Stroke)

  • ব্রেন স্টেম স্ট্রোক ( Brain Stem Stroke )

  •  ক্রিপ্টোজেনিক স্ট্রোক (Cryptogenic Stroke, stroke of unknown cause)


 


গবেষকের বক্তব্য, সাধারণ এই বয়সেই পরিবারের ভার কাঁধে এসে পড়ে। বাড়ে দুশ্চিন্তা। আর তা-ই ডেকে আছে বিপদ । মনে রাখতে হবে - 



  • স্ট্রোক হলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। 

  • ৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগী ডাক্তারের কাছে এলে, একটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেই মস্তিষ্ক থেকে ক্লট দূর করা সম্ভব হয়। 

  • সেই চিকিৎসা সফল না হলে অ্যাঞ্জিওগ্রামের মতো একটি পদ্ধতিতেও মস্তিষ্কের ক্লট বের করা সম্ভব। 

    ডা. অলোক পণ্ডিত জানালেন, স্ট্রোকের চিকিৎসা এখন আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। আর তা হতে পারে সরকারি হাসপাতালেই । কিন্তু পৌঁছতে দেরি হলেই মুশকিল। 


    ডা. অলোক পণ্ডিত