হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে এথন কম-বেশি চিন্তায় সকলেই। আসলে হার্টের অসুখ এখন আর বয়স্কদের সমস্যা হয়। মধ্য বয়সীদেরও রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে হার্টের নানাবিধ সমস্যা। কিন্তু জানেন কি, হাল আমলের একটি সাধারণ অভ্যেস শিশুদের হার্টের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকারক হয়ে উঠছে? অজান্তেই , শরীরে হার্টের অসুখের বীজ পুঁতে দেওয়া হচ্ছে শৈশবেই ? জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দাবি, অবসর সময়ে মোবাইল দেখার অভ্যেস, অনলাইন ক্লাস, গেমিং শিশুদের কার্ডিওমেটাবলিক রিস্ক বাড়িয়ে দেয়। হাল আমলে শিশুরা স্মার্টফোনেই অনেকটা সময় কাটায়। হোমওয়ার্ক, প্রজেক্ট ওয়ার্ক করা থেকে ও বিরতিতে বিনোদন , সবই ওই স্মার্ট ফোন ঘিরেই। আর এতেই বাড়ছে ক্ষতির আশঙ্কা।
গবেষকরা ১,০০০-এরও বেশি স্যাম্পেলকে নিয়ে গবেষণা করে। এঁদের স্ক্রিন টাইম মা-বাবাই জানান গবেষকদের। দুই সপ্তাহ ধরে অ্যাক্সিলোমিটার ব্যবহার করে তাঁদের ঘুম এবং শারীরিক কার্যকলাপ নজরে রাখা হয়। হয়েছিল। পাঁচটি মার্কার ব্যবহার করে কার্ডিওমেটাবলিক ঝুঁকি (CMR) পরিমাপ করা হয়। নজরে রাখা হয়, বাচ্চাদের কোমরের মাপ, সিস্টোলিক রক্তচাপ, ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা। গবেষণায় দেখা যায় , ৬-১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের প্রতিটি অতিরিক্ত ঘন্টা স্ক্রিন টাইম স্পেন্ট করার জন্য কার্ডিওমেটাবলিক ঝুঁকি প্রায় ০.০৮ অংশ বেড়ে যায়। কিশোর-কিশোরীদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি। যেসব বাচ্চারা দেরিতে ঘুমোতে যায়,তাদের কার্ডিওমেটাবলিক ঝুঁকি বেশি।
ভারতীয় শিশুদের মধ্যেও ইদানিং লক্ষণীয় হারে মোবাইল ব্যবহার বেড়েছে। ২০২০ সালে করোনাকালে অনলাইন ক্লাসই স্মার্টফোনের প্রতি বাচ্চাদের আগ্রহ বাড়িয়েছেন। এর ফলে ঘুম প্রায়শই ব্যাহত হচ্ছে । আর তার ফলে নানারকম রোগ বাসা বাঁধছে শিশু শরীরে। ছোট ছোট বাচ্চাদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে স্ক্রিন টাইম বাড়া মানেই হাঁটাচলা কমে যাওয়া। আর তার পরোক্ষপ্রভাব হৃদপিণ্ডে পড়বেই। ঘুমানোর আগে মোবাইল দেখার অভ্যেস বিপাক প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। আর এই সব কিছুর প্রভাবই পরোক্ষ ভাবে হার্টের উপরই পড়ে। গবেষকদের পরামর্শ, শিশুদের অবসর সময় স্ক্রিন টাইম প্রতিদিন দুই ঘণ্টার মধ্যে রাখতে হবে। নিয়ম করে দিতে হবে, খাওয়ার সময় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। অবসরে বাচ্চাকে টিভি বা মোবাইল ডিভাইসের পরিবর্তে, তাঁদের মাতৃভাষায় গল্প শোনান। বই পড়া বা গান শোনায় উৎসাহিত করুন। এর ইতিবাচক ফল পড়বে মানসিক ও শারীরিক অবস্থায়।