এক রাতে কয়েক ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টি। উৎসবের মরশুমে দুর্যোগে ভাসল কলকাতা। নদীর চেহারা নিল মহানগরের অলি-গলি-রাজপথ। দুর্বিসহ ভোগান্তির মধ্যেই ঘটে গেল মৃত্যুমিছিল! দুর্যোগ মাথায় কাজে বেরিয়ে প্রাণ হারালেন ১১ জন। ভয়ঙ্কর এই দুর্যোগ অনেক কিছু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে এরই মধ্যেই চিকিৎকরা বলছেন, শুধু জলযন্ত্রণা নয়, জল-জমা থেকে ঘটতে পারে বিভিন্ন জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। শুধু নিচু রাস্তা বা জমি নয়, এবারের বৃষ্টিতে দুই দিন পর্যন্ত জলবন্দি থেকেছে বহু অভিজাত আবাসনও। চিকিৎসকদের অনেকেরই আশঙ্কা, পুজোর মুখে এমন জল জমায় বহু রোগ সিঁধ কাটতে পারে ঘরে ঘরে।  ফের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে কীভাবে নিজেদের রাখবেন সুরক্ষিত পরামর্শ দিলেন, ডাঃ জয়দীপ ঘোষ, কনসালট্যান্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন,( ফর্টিস হাসপাতাল আনন্দপুর)। 

Continues below advertisement

চিকিৎসকের মতে, দুর্যোগে বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে নর্দমার নোংরা জল। নর্দমায় কিন্তু অনেক সময়ই মানুষ এবং পশুর বর্জ্য ভেসে বেড়ায়। এই জলই খাবার জলে মিশলে বা বাড়ির ভেতর ঢুকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এর ফলে হতে পারে, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এবং বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ !  জমে থাকা জলে নানারকম জীবাণু বাস করে। সেই সঙ্গে আর্দ্র আবহাওয়া মশার বংশবৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। যার ফলে অনেক পাড়ায় ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার ঘটনা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও জলবাহিত নানারকম রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে এইরকম টানা বৃষ্টি চললে। এ সময় কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা উপকারী হতে পারে। 

• শুধুমাত্র ফোটানো বা ফিল্টার করা জল পান করুন। বন্যার জলের সংস্পর্শে আসা খাবার এড়িয়ে চলুন।• দিন এবং রাতে মশারি ব্যবহার করুন। ঘরের ভেতরে বা আশেপাশে খোলা জায়গায় জল জমা হতে দেবেন না। বাচ্চাদেরও মশার কামড় থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। • নোংরা জলের সংস্পর্শে এসে ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। নানারকম সংক্রামক অসুখ ও অ্যালার্জি হতে পারে। এই সময় ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। নোংরা জলে হাত বা পা পড়লে , ভাল করে ধুয়ে ফেলা দরকার। জামাকাপড়ও সবসময় শুষ্ক রাখার চেষ্টা করা উচিত।  ভেজা কাপড় দ্রুত পরিবর্তন করা উচিত । ভেজা জুতা পরে বেশিক্ষণ হাঁটা উচিত নয়। ভেজা জামাকাপড় থেকেও অনেক সময় ইনফেকশন ছড়াতে পারে। • পরিবারের কারও যদি দুই বা তিন দিনের বেশি জ্বর থাকে, অথবা পেটে তীব্র ব্যথা, চোখ বা ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া, বমি, অস্বাভাবিক রক্তপাত বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।• বাড়িঘর এবং আশেপাশের এলাকা যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখুন। শুকনো রাখুন। শিশু এবং বয়স্কদের মতো এই ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। তাই তাদের নিয়ে সতর্ক থাকুন।

Continues below advertisement

 

Dr. Joydeep Ghosh, Consultant, Internal Medicine