বয়স বাড়ার সঙ্গে উচ্চতা কমে যায়?
শৈশব থেকে যৌবন, আস্তে আস্তে মানুষের বৃদ্ধি হয়। একটা বয়স অবধি উচ্চতা বাড়ে। তবে উচ্চতা একটা জায়গায় পৌঁছনোর পর আর বাড়ে না। আবার বৃদ্ধ বয়সে পৌঁছে কারও কারও উচ্চতা কমেও যেতে পারে। এমন উদাহরণ দেখা যায়, একজন পুরুষ ৩৫ বছর বয়সে যে উচ্চতার ছিলেন, ৮০ বছর বয়সে তার থেকে প্রায় আধ ইঞ্চি উচ্চতা কমে যায়। একজন মহিলা হয়ত একসময় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চির ছিলেন, ৯০ বছর বয়সে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি পর্যন্ত কমে যেতে পারে তাঁর উচ্চতা।
অধিকাংশ মানুষের উচ্চতা কমে যাওয়া, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কিন্তু ৭০ বছর বয়সের পরে আরও দ্রুত কমত্ থাকে ওজন। চিকিৎসকের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়ে পরিবর্তন হতে থাকে। কারণ হাড়ের ডিস্কগুলি পাতলা হতে থাকে। এছাড়া শরীরেক ভঙ্গিমা, যাকে বলে পশচার, তার কারণেও উচ্চতা কমতে পারে। কিন্তু যদি ১ ইঞ্চির বেশি উচ্চতা কমে যায়, তবে এটিকে স্বাভাবিক ধরা হয় না এবং ধরে নেওয়া যেতে পারে তাঁর শরীরে কোনো গভীর সমস্যা হতে পারে।
উচ্চতা কমে যাওয়া কি অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ?
রুথ জেসন হিকম্যান, এমডি, রিউমাটোলজি, অটোইমিউন ডিজিজ এবং নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, অনেক সময় উচ্চতা কমে যাওয়া অস্টিওপোরোসিসের প্রাথমিক সংকেত হতে পারে। এই রোগে হাড় দুর্বল ও পাতলা হয়ে যায়, যার ফলে হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মেরুদণ্ডের হাড় সংকুচিত হতে শুরু করে । শরীরের কাঠামো সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। প্রায়শই অস্টিওপোরোসিসের ফলে এমন ঘটতে পারে। উচ্চতা কমে যায় বা হঠাৎ ফ্র্যাকচার হয়। একটি গবেষণা বলছে, পুরুষদের উচ্চতা ৩ সেন্টিমিটারের বেশি কমতে পারে।
অস্টিওপোরোসিসের কারণে উচ্চতা কেন কমে?
verywellhealth অনুসারে, উচ্চতা কমার পেছনে অনেক সময় কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার দায়ী। দুর্বল হাড়ে সহজেই হালকা ফাটল ধরে। এই ফ্র্যাকচারে প্রায়শই তীব্র ব্যথা হয় না, তাই মানুষ সাধারণ পিঠের ব্যথা হিসাবে মনে করে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এর ফলে মেরুদণ্ডের হাড় সংকুচিত হয়। উচ্চতা কমতে শুরু করে। দ্বিতীয় স্থানে কাইফোসিস । যখ পিঠের উপরের দিক থেকে কুঁজো হয়ে যাওয়ার প্রবণতা হয়। অস্টিওপোরোসিসের জন্য মেরুদণ্ডের হাড় দুর্বল হয়। শরীর সামনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে, এর ফলে উচ্চতা কমতে দেখা যায়।
হারানো উচ্চতা কি ফিরে পাওয়া সম্ভব?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্টিওপোরোসিসের কারণে যার উচ্চতা কমে গেছে, তা ফিরে আসে না। তবে আপনি ভবিষ্যতে উচ্চতা কমা থেকে অবশ্যই বাঁচতে পারেন। এর জন্য আপনাকে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, ধূমপান ত্যাগ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার প্রয়োজন।
ডিসক্লেমার: এই তথ্য গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটিকে চিকিৎসা পরামর্শ হিসাবে বিবেচনা করবেন না। কোনো নতুন কার্যকলাপ বা ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।