কলকাতা: খাবারের জিনিস হোক বা অন্য কিছু, ভেজালের সমস্যা রয়েছে সর্বত্রই। নানা সময়েই বিভিন্ন জায়গা থেকে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উদ্ধার হওয়ার ঘটনা খবরে জায়গা পায়। ফলে গৃহস্থদের চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক। শস্যদানা থেকে রান্নার মশলা। নানা জায়গায় ভেজাল থাকার খবরও মেলে। যেমন ধরা যাক হলুদ গুঁড়ো। নিত্যদিন রান্নার নানা প্রয়োজনে ব্যবহার হয় এটি। হলুদের ওষধি গুণের জন্য নানা ঘরোয়া টোটকাতেও অঢেল ব্যবহার হয় এই সামগ্রী। কিন্তু যদি হলুদ গুঁড়োয় ভেজাল (Turmeric Adulteration) থাকে? উপকার তো হবেই না। উল্টে স্বাস্থ্যের জন্যও নানা সমস্যা হতে পারে। 


কীভাবে ভেজাল হয় হলুদ গুঁড়ো?
হলুদ রং আনার জন্য নানা ধরনের রং ব্যবহার করা হয় হলুদ গুঁড়োতে। মেটানিল ইয়েলো (metanil yellow) বা লিড ক্রোমেট (lead chromate) ব্যবহার করে অনেকসময় হলুদ গুঁড়োয় রং আনা হয়। অনেকসময় চকের গুঁড়োও মেশানো হয় হলুদ গুঁড়োতে। মেশানো হতে পারে আরও নানারকম অশুদ্ধি।


ঘরে যে হলুদ গুঁড়ো (Haldi powder) আসছে, সেটা কতটা খাঁটি? তা বুঝে নেওয়া যায় ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতেই। দেখে নেওয়া যাক কী কী ভাবে বোঝা যাবে হলুদ গুঁড়োর স্বাস্থ্য।


জলে মিশিয়ে
প্রথমে একগ্লাস জল নিন। সেখানে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। এবার মিশ্রণটিকে চামচ দিয়ে ভাল করে নাড়িয়ে দিন। এবার কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। যদি দেখা যায় গ্লাসের নীচে হলুদ থিতিয়ে পড়ে রয়েছে এবং গ্লাসের জলটা হালকা হলদেটে হয়ে গিয়েছে। তাহলে বোঝা যায় হলুদ খাঁটি। অনেকসময় দেখা যায় গ্লাসের জলের নীচে তেমন কিছু থিতিয়ে পড়েনি। উল্টে জলের রং ঘন বাদামি-হলদেটে রঙের হয়ে গিয়েছে। তাহলে সম্ভাবনা রয়েছে যে ওই হলুদ গুঁড়োতে লেড ক্রোমেট মেশানো হয়েছে। ওই ভেজাল শরীরের জন্য মারাত্মক খারাপ। 


একটু অ্যাসিড
যদি সম্ভব হয়, একটু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড জোগাড় করুন। একটি কাচের গ্লাসে বা টেস্ট টিউবে সামান্য হলুদ গুঁড়ো নিয়ে সেখানে কয়েক ফোঁটা অ্যাসিড ঢালুন। এরপর ভাল করে নাড়াতে হবে। যদি সেই মিশ্রণের রং গোলাপি বা হালকা গোলাপি হয়ে যায় তাহলে হয়তো ওই হলুদ গুঁড়োতে মেটানিল রয়েছে। মেটানিল পেট খারাপ, ফুড পয়জনিং বা বদহজমের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 


হলুদ চিনবে হাতের তালু
যে হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার করেন সেটাই কয়েক চিমটি হাতের তালুতে নিতে হবে। তারপর অন্য হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে ভাল করে বেশ কিছুক্ষণ ঘষতে হবে। কুড়ি সেকেন্ড মতো ঘষলে যদি হাতে হালকা হলদেটে দাগ তৈরি হয়। তাহলে সেই হলুদ গুঁড়ো খাঁটি।


ঘরোয়া পদ্ধতিতে হলুদ গুঁড়ো পরীক্ষা করে কোনওরকম সন্দেহ হলে, সঙ্গে সঙ্গেই সেই হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। প্রয়োজনে কোনও ল্যাব থেকেও পরীক্ষা করাতেই পারেন।