কলকাতা: ডায়াবেটিসের সমস্যা এখন সারা বিশ্বেই বেড়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে বর্তমানে ৪২২ মিলিয়ন সুগারের রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আবার অল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলির বাসিন্দা। ৪২২ মিলিয়ন অর্থাৎ ৪২.২ কোটি মানুষের মধ্য এই রোগে প্রতি বছর মারা যান কমবেশি ১.৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৫ লাখ মানুষ। ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ এই রোগে ভুগছেন। শুধু যে বয়স বাড়লেই এই রোগ থাবা বসাচ্ছে, তা নয়। বরং অল্প বয়সিদের মধ্যে গেড়ে বসছে এই রোগ। এই রোগ থেকে রেহাই পেতে প্রায়ই বিভিন্ন ঘরোয়া টোটকার কথা বলা হয়ে থাকে। আমাদের পরিচিত কিছু ফলের মধ্যেই রয়েছে সেই সঞ্জীবনী মন্ত্র। তেমনই একটি ফল হল আমলকি।
আমলকির কী কী গুণ?
আধুনিক বিজ্ঞানে ডায়াবেটিস কমাতে আমলকির ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রমাণ রয়েছে। তবে এর পাশাপাশি আয়ুর্বেদেও এই বিশেষ ফলটির উল্লেখ মেলে। আমলকি উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। যাদের সুগার মাত্রা প্রায়ই অনিয়ন্ত্রিত থাকে, তাদের বিশেষভাবে এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কেন ডায়াবেটিসে আমলকি খাবেন?
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ: ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ইনফ্লেমেশন অর্থাৎ প্রদাহজাতীয় সমস্য়া ঘন ঘন দেখা যায়। এই প্রদাহটি নানা কারণে হয়ে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। শরীরে উৎপন্ন এই স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এর ফলে সুগারের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমলকির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি আসলে ভিটামিন সি। যা প্রদাহ কমাতে বিশেষ কার্যকরী।
- ফাইবারে ভরপুর: আমলকির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এই ফাইবার রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কীভাবে? আসলে ফাইবার আমাদের পেটে গিয়ে হজম হতে সময় নেয়। অন্যান্য খাবারের তুলনায় এটি বিয়োজন ধীরে হয়। আবার অন্যদিকে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এই বিশেষ খাদ্য উপাদানটি। ইনসুলিনই রক্তে সুগারকে সামলে রাখে। ফলে এর ক্ষরণ কমে গেলে সুগারের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। সেই ইনসুলিনকে জোরদার করতেই সাহায্য করে আমলকির ফাইবার।
- মেটাবলিজম ঠিক রাখে: ডায়াবেটিস একটি মেটাবলিক রোগ। মেটাবলিজমের সমস্যার কারণেই এই রোগ বাঁধে। সেই মেটাবলিজমের গোলমালকে নিয়মে বাঁধতে সাহায্য করে আমলকির গুণ। এতে সুগারের মাত্রাও আয়ত্তের মধ্যে থাকে।
ডিসক্লেমার : সবার স্বাস্থ্যের ধরণ সমান নয়। তাই উল্লেখিত পরামর্শ প্রয়োগের আগে বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন।
আরও পড়ুন: Stress side effects: বয়স যত বাড়ে, তত ছেঁকে ধরে নানা রোগ ! শরীরের কোন ভুলে এমন হয়