মারণরোগ ক্যান্সার। চিকিৎসাশাস্ত্র যতই উন্নত হোক না কেন, ক্যান্সারের ভয়াবহতা কমেনি একটুও। বরং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ভয় ধরাচ্ছে পরিসংখ্যান। ভারতে ২০২৪ সালে ক্যান্সারের ১৫.৩৩ লক্ষেরও বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৪.৯৬ লক্ষ।  ২০২২ সালে ১৪.৬১ লক্ষ মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়।

Continues below advertisement

পরিসংখ্য়ানেই স্পষ্ট, প্রতি বছর এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। দিল্লিতে পরিস্থিতিটা বেশ ভয়াবহ। ২০২৪ সালে দিল্লিতে মোট ২৮,৩৮৭ জনের ক্যান্সার রোগী ধরা পড়ে।  ২০২৩ সালে ২৭,৫৬১ জন এবং ২০২২ সালে ২৬,৭৩৫ টি কেস ধরা পড়ে। ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যার এই দ্রুত বৃদ্ধি থেকেই স্পষ্ট কর্কট রোগের থাবা ক্রমেই চওড়া হচ্ছে।  এই পরিস্থিতিতে  বিশেষজ্ঞরা স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসার পরিষেবা বাড়ানোর দাবি করছে।

দিল্লি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে 

Continues below advertisement

ICMR ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রামের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে যে উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্যান্সার ধরা পড়েছে ২০২৪ সালে। রাজ্যে ২.২১ লক্ষ রোগী।  সারা দেশে সর্বাধিক । এরপরেই রয়েছে মহারাষ্ট্রের স্থান। ১.২৭ লক্ষ ক্যান্সার আক্রান্ত সেখানে।  পশ্চিমবঙ্গে ২০২৪ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে ১.১৮ লক্ষ জন। বিহারে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে গতবছরে ১.১৫ লক্ষ। তামিলনাড়ুতে ৯৮,৩৮৬ জন ক্যান্সার আক্রান্ত। দিল্লিতে সংখ্যাটা বিরাট না হলেও, আক্রান্তের সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে বিরাট। 

অনকোলজিস্টরা বলছেন যে জীবনযাত্রা, দূষণ এবং দেরিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, এই তিনটি কারণেই দিল্লিতে ক্যান্সার দ্রুত বাড়াচ্ছে।   নতুন দিল্লির সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. প্রমোদ জৈন-এর (ফর্টিস হাসপাতাল) মতে, এখন বহুজনই কম বয়সেই আক্রান্ত হয়েছে। রোগের নির্ণয় হচ্ছেও দেরিতে। তাঁর মতে, এর জ্য অনেকটাই দায়ী দিল্লির বিষাক্ত বাতাস, মানসিক চাপ, খারাপ খাদ্যাভ্যাস। এর ফলেই রাজধানীতে ক্যান্সারে পারফেক্ট স্টর্ম তৈরি করছে।

নয়ডার সঞ্জীবনী হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজিস্ট ড. অমৃতা গুপ্তা বলেন , দীর্ঘ কাজের সময়, কম শারীরিক কার্যকলাপ, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া এবং তামাক ও অ্যালকোহল খাওয়া বেড়ে যাওয়া,  সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপরন্তু, দিল্লির বাতাস ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। তিনি মনে করেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করা এবং ডাক্তারের কাছে দেরিতে যাওয়ার কারণেও বেশিরভাগ রোগীর শেষ পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়ছে । সামান্য জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং সময়মতো স্ক্রিনিং অনেক বড় পার্থক্য আনতে পারে। 

সরকারের বক্তব্য কী?

সংসদে ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার বোঝা নিয়ে জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব জানান , সরকার NP-NCD প্রোগ্রামের অধীনে প্রতিরোধ, স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসার সুবিধা বাড়াচ্ছে। সারা দেশে বর্তমানে ৭৭০টি জেলা NCD ক্লিনিক, ৬,৪১০টি CHC ক্লিনিক এবং ৩৬৪টি জেলা ডে-কেয়ার কেমোথেরাপি সেন্টার কাজ করছে। এছাড়াও কেন্দ্র ১৯টি স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, ২০টি টার্সিয়ারি ক্যান্সার সেন্টার এবং নতুন AIIMS-এ অনকোলজি ইউনিট স্থাপন করেছে। মন্ত্রী বলেন,  চিকিৎসা যাতে ব্যয়বহুল না হয়, তাতে অনেক ক্যান্সারের ওষুধ জন ঔষধি কেন্দ্র এবং AMRIT ফার্মেসিগুলিতে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।  

Disclaimer: এই তথ্য গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটিকে চিকিৎসা পরামর্শ হিসাবে বিবেচনা করবেন না। কোনো নতুন কার্যকলাপ বা ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।