নয়াদিল্লি: প্রতি বছর ২১ জুন পালন করা আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। যোগাসনের উপকারিতা বোঝানো সহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় যোগাসনের ভূমিকার জন্য এই দিনটা পালন করা হয়। যোগাসন ভারতের অতি প্রাচীন একটি অনুশীলন পদ্ধতি। শরীরের শক্তি বৃদ্ধি সহ মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে যোগাসনের ভূমিকা অপরিসীম। যোগাসনের জন্য কোনও যন্ত্র প্রয়োজন হয় না।  বাড়ির ভেতরেই করা যেতে পারে যোগাসন। শ্বাস প্রক্রিয়া এবং স্ট্রেচিং সামঞ্জস্য রয়েছে যোগাসনে। প্রতিদিন নিয়ম করে যোগাসন করলে একাধিক রোগ মুক্তি হয়। পাশাপাশি হাড়, পেশি শক্ত হয়। হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে যোগাসন।


দিনের শুরুতে যোগাসন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেকেই। যাঁরা প্রথম যোগাসন শুরু করতে চলেছেন  তাঁদের জন্য ৫টি সহজ পদ্ধতি জানানো হল।


 


সূর্য নমস্কার- ১২টি যোগাসনের সংমিশ্রণ সূর্য নমস্কার। এই পদ্ধতিতে মেরুদণ্ড সহ শরীরের পিছনের অংশের পেশি শক্ত হয়। মেটাবলিজম এবং রক্ত সঞ্চালনা বৃদ্ধি করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।


সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। হাতের অবস্থান থাকবে প্রার্থানার মতো।


এবার হাত জোড় করা অবস্থায় মাথার পিছনে নিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে পিছন দিকে স্ট্রেচ করতে হবে। নিশ্বাস ত্যাগ করতে হবে এবং নিচু হতে হবে।


বুকের কাছে নিয়ে যেতে হবে ডান হাঁটু। পিছনে দিকে ঠেলতে হবে বাঁ পা। সঙ্গে প্রশ্বাস নিতে হবে।


এবার ডান পা-কে বাঁ পায়ের পাশে নিয়ে নিশ্বাস ত্যাগ করে  প্ল্যাঙ্ক পজিশনে থাকতে হবে।


ম্যাটের উপর দেহ রেখে দুই হাতের তালু রাখতে হবে পাশে। পেট উপরের অংশ উঁচু করতে হবে। মাথা পিছন দিকে ঠেলতে হবে। প্রশ্বাস গ্রহণ করতে হবে।


ধীরে ধীরে  নিতম্ব উঁচু করে এমন অবস্থায় থাকতে হবে যেন দেহের আকৃতি হয় ইংরাজি হরফের V। 


এবার নিচু করতে হবে বাঁ হাঁটু। পিছনে দিকে ঠেলতে হবে ডান পা। সঙ্গে প্রশ্বাস নিতে হবে।


এবার একসঙ্গে দুই পা নিয়ে এসে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। হাত জোড় করা অবস্থায় মাথার পিছনে নিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে পিছন দিকে স্ট্রেচ করতে হবে। এরপর প্রথম অবস্থা অর্থাৎ প্রণাম অবস্থানে আনতে হবে।


 


ভুজঙ্গাসন - এই পদ্ধতিতে বুকের অবস্থান এমন হবে যেন সাপের ফনার মতো দেখতে লাগে।  পেটের পেশি শক্ত করে। পিঠের ব্যথা নিরাময় করে। কোবরা পোজ় নামেও পরিচিত এই যোগাসন। পাশাপাশি পেটের ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে।


উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে হবে প্রথমে।


হাতের তালু রাখতে হবে বুকের পাশে।


ধীরে ধীরে হাতের তালুর উপর ভর করে পেট এবং বুক উঁচু করতে হবে।


এই উঁচু করার সময় প্রশ্বাস নিতে হবে এবং স্ট্রেচ করতে হবে।


যতক্ষণ সম্ভব এই অবস্থায় থাকতে হবে।


 


মুদ্রা আসন- হজম শক্তি বৃদ্ধি থেকে পেটের পেশির শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই যোগাব্যায়াম। সকালে এই যোগাসন করলে সারাদিন খাবার হজম হয়।


হাঁটু ভাজ করা অবস্থায় বসতে হবে।


দুটি হাত পিছনে দিকে নিয়ে ঠেলতে হবে।


গভীর প্রশ্বাস নিয়ে হবে।


যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার মাথা মেঝেতে রাখতে পারছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ধীরে ধীরে নিশ্বাস ছাড়ুন।


বেশ কয়েক সেকেন্ড থাকতে হবে এইভাবে।


 


পারসা সুখাসনা- মানসিক উদ্বেগ এবং চাপ কমাতে সাহায্য করে এই যোগাসন। সকালে এই যোগাসন নিয়মিত করলে দিনের ব্যস্ত সময়েও মন থাকবে শান্ত এবং স্থীর।


পদ্মের মতো পা ভাঁজ করে বসতে হবে। গভীর শ্বাস নিতে হবে।


হাত ধীরে ধীরে মাথার উপর তুলতে হবে।


এবার নিশ্বাস ত্যাগ করতে করতে হাতের তালু বুকের কাছে আনতে হবে।


বাঁ হাত মাটিতে রেখে শরীরের উপরের অংশ ঠেলতে হবে। ডান হাত থাকবে মাথার উপর যেদিকে দেহ ঝুঁকে রয়েছে সেই দিকেই।


পুরনো পজিশনে এসে অন্য হাত দিয়েও একই ভাবে এই যোগাসন করতে হবে।


দ্বিতীয় পর্যায় শেষ হয়ে গেলে পা ভাঁজ  করা অবস্থায় দুই হাত সেখানে রাখতে হবে। ধীরে ধীরে প্রশ্বাস নিতে হবে এবং নিশ্বাস ত্যাগ করতে হবে।


 


কুম্ভকাসন- এটা প্ল্যাঙ্ক পোজ়ও বলা হয়ে থাকে। যার প্রভাব মূলত পরে দেহের পশ্চাদ অংশ এবং পেটের উপরে। যা পেশিকে শক্তিশালী করে। পজিশন ধরে রাখতে প্রচুর প্রচেষ্টা দরকার।


প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে হবে।


এবার হাতের তালু ও পায়ের পাতার উপর শরীরের ব্যালেন্স রাখতে হবে।


পা রাখতে হবে সোজা। একটা সরলরেখায় রাখতে হবে দেহকে। কিছুক্ষণ এভাবে থাকতে হবে।


ধীরে ধীরে নিশ্বাস ত্যাগ করতে  হবে। শরীরে নিচের অংশে যেন বিশ্রামে থাকে। সেদিকেও নজর দিতে হবে।