কলকাতা: একেই শীত, তার উপর বৃষ্টির আবহাওয়া। আর এই আবহাওয়াতেই খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে হতে পারে অনেকের। এই আবহাওয়ায় খিচুড়ি শরীরের পক্ষে কতটা উপকারী? এই বিষয়ে এবিপি লাইভকে বিশদে জানালেন নারায়ণা হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান পদ্মজা নন্দী।
খিচুড়ির গুণাগুণ:
- পুষ্টিবিদের কথায়, খিচুড়ির মধ্যে চাল ও ডাল দুই-ই থাকে। ফলে আমাদের শরীরে দুটি বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিডের জোগান ঠিক থাকে। এর মধ্যে চাল থেকে আসে লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড। অন্যদিকে ডালের মধ্যে রয়েছে মিথিয়োনিন। খিচুড়িতে এই দুটিই থাকে বলে এটি প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস।
- অন্যদিকে, খিচুড়িতে শীতের মরসুমি সবজি উপকরণ হিসেবে দেওয়া যেতে পারে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও কিছু প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ পায় আমাদের শরীর।
- শীতের মরসুমে প্রায়ই সর্দিকাশি লেগে থাকে। তাই খিচুড়ি একটু কম ঘন রাখলে গলা ব্যথার সমস্যায় এটি ভাল দাওয়াই হতে পারে।
- বলা হয়, খিচুড়ি খেলে শরীরে জলের পরিমাণ কমে যেতে পারে। তবে পুষ্টিবিদের কথায়, এর মধ্যে থাকা সবজিগুলি শরীরে জলের পরিমাণ ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা কম।
খিচুড়ির মুখরোচক রেসিপি
কমবেশি এই পদটি রাঁধতে প্রায়ই সবাই জানেন। তবুও পাঠকদের জ্ঞাতার্থে শীতের মরসুমি সবজি দিয়ে এই রান্নাটির প্রণালী পরিবেশন করা হল।
উপকরণ: ১০০ গ্রাম মুগডাল, ২০০ গ্রাম গোবিন্দভোগ চাল, দুই চামচ সর্ষের তেল, পাঁচফোড়ন, ২-৩টি তেজপাতা, ১৫০ গ্রাম ফুলকপি, ১৫০ গ্রাম গাজর, ১৫০ গ্রাম কুমড়ো, ১৫০ গ্রাম আলু কেটে রাখা, এক চা চামচ হলুদ, এক চা চামচ জিরেগুঁড়ো, এক চা চামচ লঙ্কাগুঁড়ো,দু-তিনটে কাঁচালঙ্কা, পরিমাণমতো নুন, আধ চা চামচ গরম মশলা, এক চামচ ঘি।
প্রণালী: প্রথমে একটি কড়াইতে ১০০ গ্রাম মুগডাল নিন। এটি মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ ভেজে নিতে হবে। কিছুক্ষণ পর ডালের থেকে ভাজা ভাজা গন্ধ বেরোলে সেটি একটি পাত্রে আলাদা করে রেখে দিন। এবার এই মুগ ডালেই ২০০ গ্রাম গোবিন্দভোগ চাল নিয়ে নিন। ভাল করে দুটি মিশিয়ে খাবারের জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। চাল ও ডাল ভাল করে সাফ করতে অন্তত দুইবার জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার কড়াই কিছুটা গরম করে নিয়ে তাতে দুই চামচ সর্ষের তেল দিন। তেল গরম হয়ে এলে আঁচ কমিয়ে নিন। প্রথমে এতে তেজপাতা ও পরে পাঁচফোড়ন দিন। এক-দুই মিনিট পর আঁচ মাঝারি করে নিন। এর পর এতে কেটে রাখা মরশুমি শাক, সবজি যেমন ফুলকপি, গাজর, কুমড়ো ও অর্ধেক করে কাটা আলু দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচেই কিছুক্ষণ সবজিগুলি সাঁতলে নিতে হবে।
এর পর এতে এক চা চামচ হলুদ দিয়ে আরও দুই মিনিট নেড়ে নিন। এবারে এতে একে একে এক চা চামচ জিরেগুঁড়ো, এক চা চামচ লঙ্কাগুঁড়ো, দু-তিনটে কাঁচালঙ্কা ও পরিমাণমতো নুন দিয়ে দিন। এর পর এতে কেটে রাখা একটি টমেটো দিয়ে দিন। আঁচ হালকা করে নিয়ে এবার মশলাটি ভাল করে কষিয়ে নিন। এক-দুই মিনিট পর এতে আদাবাটা দিয়ে আবার কষাতে থাকুন। কিছুক্ষণ পর এর মধ্যে চাল ও ডাল দিয়ে দিতে হবে কড়াইয়ে। এবার পুরো মিশ্রণকে ভাল করে কষিয়ে নিন। ঠিকমতো কষানো হয়ে এলে এতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিন। এবার জল ফুটতে শুরু করলে আঁচ অল্প করে এটি ঢাকা দিয়ে দিন।
মোটামুটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঢাকা তুলে দেখে নিন সবজিগুলি সিদ্ধ হল কি না। সিদ্ধ হয়ে এলে খিচুড়িতে জল কতটা থাকবে, সেটি ঠিক করে নিতে হবে। সবশেষে আধ চা চামচ গরম মশলা মিশিয়ে উপর দিয়ে ঘি ছড়িয়ে দিন। মিশ্রণটি এবার ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলেই তৈরি গরম গরম খিচুড়ি।
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/পদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।
আরও পড়ুন: Fenugreek Leaves: গ্যাসের ব্যথা কাবু হবে, সুগারও থাকবে কবজায় ! এই শাকের হাজার একটা গুণ