কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যা রক্ত পরিশোধন এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের কাজ করে। যদি এই অঙ্গে ক্যানসার শুরু হয় এবং সময়মতো শনাক্ত না করা হয়, তাহলে এটি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি ক্যানসারের লক্ষণগুলি খুবই হাল্কা থাকে, যাতে অনেকেই মনোযোগ দেন না।
রাতে দেখা যেতে পারে কিডনি ক্যানসারের লক্ষণ-
চিকিৎসকদের মতে, কিডনি ক্যানসারের কিছু লক্ষণ রাতে বেশি স্পষ্ট হয়। যদি এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে কোনওটি লক্ষ্য করেন, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে বা ঘুমানোর সময়, তাহলে সতর্ক থাকুন:
- রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাবে রক্ত পড়া
- পিঠের নীচের অংশে বা কোমরে তীব্র ব্যথা
- অকারণে ওজন কমে যাওয়া
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতার অবিরাম অনুভূতি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা কখনও কখনও হার্ট ফেলিওয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এবিপি নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, এক সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ব্যাখ্যা করেছেন যে, দিনের বেলায় হার্ট ফেলিওরের ক্ষেত্রে শরীরে, বিশেষ করে পায়ে তরল জমা হয়। যখন আমরা রাতে শুয়ে থাকি, তখন এই তরল রক্তের সঙ্গে মিশে কিডনিতে পৌঁছায়, যা এটিকে ফিল্টার করে এবং আমরা ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু করি। তবে, যদি এর সঙ্গে রক্তপাত বা পিঠে ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে কিডনি ক্যানসারের পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকি কি বাড়ছে ?
কিডনি ক্যানসারের পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। সবচেয়ে বড় কারণ হল, ধূমপান। যারা প্রচুর ধূমপান করেন তাঁদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতাও এর প্রধান কারণ। দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত ব্যথানাশক ব্যবহার কিডনির ক্ষতি করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি-
যদি সময়মতো কিডনি ক্যানসার শনাক্ত না করা যায়, তবে এটি কেবল কিডনির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এই রোগ ধীরে ধীরে ফুসফুস, হাড় এবং অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে। একবার ক্যানসার ছড়িয়ে পড়লে, এর চিকিৎসা কঠিন এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। এই কারণেই প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে সুস্থ রাখবেন ?
আপনার কিডনি সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা বা ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস থাকে। এ ছাড়া, কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল:
- বছরে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।
- নুন এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
- ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন।
- বেশি করে জল পান করুন ।
- স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন।
যদি আপনি প্রস্রাবে রক্ত, ক্রমাগত পিঠে ব্যথা, অথবা অকারণে ওজন হ্রাসের মতো লক্ষণগুলি দেখেন, তাহলে অবিলম্বে একজন নেফ্রোলজিস্টের সহ্গে পরামর্শ করুন। সময়মতো রোগ নির্ণয় আপনার জীবন বাঁচাতে পারে।
ডিসক্লেমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।