ভারতে হু হু করে বাড়ছে  কিডনির অসুখ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল, চিকিৎসকের একাংশ মনে করছেন, ভারতে কিডনির রোগ একটি জনস্বাস্থ্য উদ্বেগের বিষয়। সাম্প্রতিক এক স্টাডি বলছে, এ দেশে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে  ক্রনিক কিডনির রোগের প্রকোপ ১১.২% (২০১১-২০১৭) থেকে বেড়ে ২০১৮-২০২৩ সালের মধ্যে ১৬.৩৮% হয়েছে।  কিডনি ধীরে ধীরে রক্ত পরিশুদ্ধ করা ও বর্জ্য নিষ্কাশন করার  ক্ষমতা হারায় তখন তাকে CKD বলা হয়। এর ফল মারাত্মক হতে পারে। কারণ প্রাথমিক স্তরে অনেক সময় মানুষ রোগটি ধরতেই পারে না। আর যখন ধরা পড়ে, তখন হয়ত সমস্যা হাতের বাইরে চলে যায় । তাহলে উপায়?

সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, কারও ভবিষ্যতে সিকেডি বা কিডনির ক্রনিক অসুখ হবে কি না , তার পূর্বাভাস করা যায় একটা পরীক্ষার মাধ্যমেই। এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি সাধারণ রক্ত বা প্রস্রাব পরীক্ষাই বলে দিতে পারে ভবিষ্যতের ঝুঁকির কথা। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ কতটা অগ্রসর হতে পারে, তা বোঝা যেতে পারে কয়েকটি জৈবিক সংকেত থেকে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দলটি দেখিয়েছে, রক্ত এবং প্রস্রাবে   কিডনি ইনজুরি মলিকিউল-১ (KIM-1) - এর উচ্চ মাত্রা দিতে পারে সিকেডি-র পূর্বাভাস। KIM-1  কিডনির রোগের অগ্রগতি নির্ণয়ে একটি মূল্যবান মার্কার। 

গত মাসে, এই গবেষক দলটি রক্ত এবং প্রস্রাবে কিডনির রোগ সংক্রান্ত ২১টি মার্কারকে বেছে নেয়, যা আগে থাকতে বুঝিয়ে দেয় কারও কিডনি রোগ, প্রদাহ এবং হৃদরোগ কতটা খারাপ দিকে যেতে পারে।  এই মার্কারগুলি মানুষের শরীরে জৈবিক পরিবর্তনগুলি স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়। এর থেকেই ডাক্তাররা বুঝতে পারবেন, কার কিডনির অসুখ কতটা খারাপ দিকে যাওয়ার আশঙ্কা। গবেষকদের দাবি, এই আবিষ্কার  চিকিৎসার নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। যদিও গবেষকরা এটা মানেন, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের অগ্রগতি মানুষভেদে আলাদা।  তাই কোন রোগী কিডনি অসুখ কত তাড়াতাড়ি খারাপ দিকে যাবে, তা ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। তবে এই পরীক্ষাগুলি ঝুঁকির মাত্রা আরও ভালভাবে  বুঝবে আগে থেকেই। এই পরীক্ষা  অন্তর্নিহিত জৈবিক পরিবর্তনগুলিকে স্পষ্ট করবে।

আমেরিকান জার্নাল অফ নেফ্রোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় উল্লেখ, সংশ্লিষ্ট গবেষকরা ইউকে-র ১৬টি নেফ্রোলজি সেন্টার থেকে ডায়ালাইসিস করা হয় না, এমন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের রক্ত এবং প্রস্রাব বিশ্লেষণ করেছেন।

KIM-1 বিশ্লেষণের জন্য গবেষকরা আড়াই হাজারেরও বেশি স্যাম্পল কালেক্ট করেন। এই সব রোগীদের রক্ত এবং প্রস্রাবের KIM-1 প্যারামিটারটি বিশ্লেষণ করা হয়।  পৃথকভাবে আবার প্রায় সম পরিমাণ আলাদা স্যাম্পল কালেক্ট করা হয়। এক্ষেত্রে KIM-1 নয়, অন্যান্য প্রচলিত প্যারামিটারে নজর রাখা হয়।  এই দ্বিতীয় সেটের রোগীদের ক্ষেত্রে কিডনির ক্ষতির জন্য দায়ী অন্য ২১ টি মার্কারে নজর রাখা হয়। 

গবেষকরা বলছেন এই নতুন মডেলগুলি ব্যবহার করে ডাক্তাররা অনেক আগে থাকতে কিডনির রোগ কতটা জটিল হতে পারে কার ক্ষেত্রে তার একটা পূর্বাভাস করতে পারে। এই পরীক্ষাগুলো সেই সব জৈবিক সংকেতগুলি স্পষ্ট করে, যেগুলি পরিষ্কার বলে দেয় ভবিষ্যতে কিডনির অসুখ কার কতটা খারাপ দিকে যাবে, সেটা। এর ফলে এই মডেলগুলি ব্যবহার করে ডাক্তাররা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারবে। সেই অনুসারে চিকিৎসাও বরতে পারবে। আবার যাঁদের ঝুঁকি কম, তাঁদের ওপর অতিরিক্ত ওষুধ-পত্তরের বোঝাও চাপিয়ে দেবেন না।  

ডিসক্লেমার: এটি একটি  third party syndicated feed। লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এবিপি লাইভ কোনও কিছু প্রেসক্রাইব করে না।