কলকাতা: তেল ছাড়া রান্না সম্ভব নয়। বিশেষ করে ভারতীয় রান্নায় তেল ছাড়া স্বাদই আসবে না। ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই ভাজাজাতীয় খাবার খাওয়ার চল রয়েছে। তার জন্য় প্রচুর পরিমাণে তেল প্রয়োজন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলে থাকেন অতিরিক্ত তেল খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইদানিং কাজের চাপে শরীরচর্চাও সেরকম হয় না। ব্যায়াম করলেও স্ট্রেস এবং আরও একাধিক কারণে সহজেই লাইফস্টাইল ডিজিজের শিকার হন অনেকেই। সবদিক ভেবেই ভোজ্যতেলের দিকেই নজর রাখতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। 


আগে সর্ষের তেলে প্রায় সব রান্না হতো। তারপর ধীরে ধীরে দিন বদলেছে। সর্ষের তেলের জায়গা দখল করেছে বিভিন্ন সাদা তেল। স্বাস্থ্যের প্রয়োজনেই ইদানিং কমেছে সর্ষের তেলের ব্যবহার। সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী, তুষের তেলের পাশাপাশি রয়েছে অল্প ব্যবহৃত অ্যাভোকাডো তেল (Avocado Oil)।


অ্যাভোকাডোর বহুগুণ:
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অ্যাভোকাডো উপকারী। জার্নাল অফ দি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশেন (Journal of the American Heart Association)-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে এই কথা। সেখানে বলা হয়েছে, অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার (Fiber) রয়েছে। আনস্যাচুরেটেড (Undaturated) ফ্যাট রয়েছে। বিশেষ করে রয়েছে মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা শরীরের জন্য উপকারী। এই পদার্থগুলির উপস্থিতির জন্য হৃদযন্ত্রের সমস্যার ঝুঁকি কমিয়ে দেয় অ্যাভোকাডো। এর আগেও এই নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (Clinical Trial) হয়েছে। সেখানেও হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অ্যাভোকাডোর গুণ রয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। এই গবেষণার তারই স্বপক্ষে প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি গবেষকদের।


ভিটামিনের সমাহার:
ফলে অ্যাভোকাডো থেকে তৈরি ভোজ্যতেলেও (Edible Oil) রয়েছে উপকার। ওমেগা থ্রি, ভিটামিন এ, ডি, ই-এর মতো একাধিক ভিটামিনের (Vitamin) উপস্থিতি রয়েছে এই ভোজ্যতেলে।


হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী:
লো স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় এই তেল হৃদযন্ত্রের জন্য ভাল। খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে অ্যাভোকাডো অয়েল (Avocado Oil)। ভিটামিন ই-এর উপস্থিতি রক্তবাহী ধমনীর স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। কিডনিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড রাখতে সাহায্য করে।


গাঁটের ব্যথায় সুরাহা:
শরীরে বিভিন্ন গাঁটে প্রয়োজনীয় fluid কমে যায় বলে যন্ত্রণা হয়। এর ফলে গাঁটের নড়াচড়াও সীমিত হয়ে যায়। অ্যাভোকাডো তেল মালিশ করলে বা খেলে- দুভাবেই গাঁটের এই সমস্যা থেকে সুরাহা মেলে বলে দাবি।


ত্বকের জন্যও ভাল:
ত্বকে নানারকম অ্যালার্জি (Allergy) বা ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ দেখা যায় বর্ষাকালে। এই সময়ে অ্যাভোকাডো তেল কাজে আসে। নিয়মিত মালিশে ত্বকের সংক্রমণ ঠেকাতে পারে। একজিমা, ব্রণ, ডার্মাটাইটিসের নিরাময়ে এই তেল অনেকসময় ব্যবহার করা হয়। 


অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর:
ভরপুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট (Anti Oxidant) রয়েছে এই তেলে। যা আদতে কোষের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বলা হয়েছে থাকে, অ্যাভোকাডোর তেল সহজে শরীরে খাদ্যদ্রব্যের পুষ্টি নিতে সাহায্য করে থাকে।  ক্যারোটিনের মাত্রাও বৃদ্ধি করে। 


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন। 


আরও পড়ুন: খাওয়ার পরেই পেট ফুলে যায়? এই নিয়ম মেনে চললেই মিটবে সমস্যা