কলকাতা : সিগারেটের নেশা ছাড়তে অনেকেই এখন ই-সিগারেটে টান দিচ্ছেন। ধূমপানের নেশা থেকে মুক্তি দেবে ই-সিগারেট (e-cigarette), এমনটাই জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর সেকথা মাথায় রেখেই ই-সিগারেট বাজারে এনেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বর্তমানে একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এতে ভালর বদলে ক্ষতিই বেশি। সিগারেটের নেশা ছাড়তে গিয়ে আরেক ড্রাগের নেশায় ডুবে যাচ্ছেন অনেকে, এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ই-সিগারেটের ব্যবহারের কারণে তরুণদের মধ্যে কোকেন আর নিকোটিনের নেশার পরিমাণ বেড়ে চলেছে বলেই দাবি করেন বিজ্ঞানীরা।
'মাদারস এগেইনস্ট ভ্যাপিং' (Mothers Against Vaping) নামের একটি সংস্থার সদস্যদের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই ই-সিগারেটগুলিতে ৯০০ থেকে ২০০০ রকমের রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে যা ফুসফুসের অনেক গভীর পর্যন্ত চলে যায়। এর ফলে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সিগারেটের বিপদ এড়িয়ে ধূম সেবনের সুখের আশায় ই-সিগারেট (e-cigarette) ধরেছেন অনেকেই। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, ই-সিগারেট ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে, এর কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে এর প্রভাব সাধারণ সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন তাঁরা।
ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণে থাকে প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, কৃত্রিম গন্ধ এবং নিকোটিন। গরম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সব রাসায়নিক থেকে সাধারণ সিগারেটের ধোঁয়ার সমপরিমাণ ফরমালডিহাইড উৎপন্ন হয়। ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা থাকে। এর ফলে গলা-মুখ জ্বালা, বমি-বমি ভাব, খুসখুসে কাশি দেখা দিতে পারে। ফুসফুসে প্রদাহ থেকে ফুসফুসের ক্যানসারও দেখা দিতে পারে ই-সিগারেটের বহুল ব্যবহারে, জানিয়েছেন গবেষকরা।
ই-সিগারেটে (e-cigarette) প্রধানত যে নিকোটিন থাকে তা থেকে খুব সহজেই আসক্তি তৈরি হতে পারে। সিগারেটের নিকোটিন এড়াতে গিয়ে এই নিকোটিনে আসক্ত হয়ে পড়ার কারণে আখেরে কোনও উপকার হয় না মানুষের, এমনটাই মত 'মাদার্স'-এর সদস্যদের। জাপানে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর। ওহিও ইউনিভার্সিটির টোবাকো রিসার্চ সেন্টারের গবেষণার ফলকে মাথায় রেখে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে ই-সিগারেট ব্যবহারের মাত্র ১ মাসের মধ্যেই তরুণদের মধ্যে বিপজ্জনক ফুসফুসের অসুখ দেখা দিতে পারে। এর থেকে যে ক্ষতি হতে পারে শরীরে তা আর কোনওভাবেই সারিয়ে তোলা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা।