কলকাতা: নিজের আগে যারা রোগীর কথা ভেবে চলেছেন, মুমূর্ষুদের জীবনে এনে দেন একমুঠো প্রাণের হাসি, আজ তাঁদের দিন। চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তাঁদের কঠোর পরিশ্রমকে উপেক্ষা করা যায় না। চিকিৎসকরা সমাজে ঈশ্বরের মর্যাদা পেয়েছেন। নিজেদের জীবনের চিন্তা না করে সমাজ ও দেশের সেবায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।


২০২৩ এ এই দিনটিকে চিকিৎসকদের সহনশীলতা এবং রোগ উপশমের ভূমিকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক হিসেবে তাঁদের এই ভূমিকাকেই আজকে দেশজুড়ে উদযাপন করার অঙ্গীকার নেওয়া হয়েছে। 


১ জুলাই দিনটিকে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ভারতে। ১৯৯১ সালে প্রথম বার এই দিনটি পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের (Dr. Bidhan Chandra Roy) প্রতি সম্মান জানিয়েই এই তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছে। বিধানচন্দ্র এক দিকে ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক, অন্য দিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়াও তাঁর আরেক পরিচয় বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবেও। ১৯৬১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভারতরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে।


ডা. বিধানচন্দ্র রায় ১৮৮২ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। বিহারের পটনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল প্রকাশচন্দ্র রায়। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়া শেষ করেন। এর পর তিনি লন্ডন থেকে এফআরসিএস এবং এমআরসিপি ডিগ্রি অর্জন করেন। ভারতীয় হওয়ার কারণে লন্ডনে ভর্তি হতে বাধার মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। তবে তাতে হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো ছিলেন না এবং আবেদন করতে থাকেন লাগাতার।


তাঁর মৃত্য়ুর তারিখটিও একই। ১৯৬২ সালের ১ জুলাই প্রয়াত হন ডা. বিসি রায়। সমাজকল্যাণে প্রচুর অবদান রেখেছিলেন তিনি। দেশের বহু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিলেন ডা. বিধানচন্দ্র রায়।


চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর জন্য প্রতিবছর ১ জুলাই ভারতে জাতীয় ডাক্তার দিবস পালিত হয় । ডাক্তাররা শত সহস্র জীবন বাঁচাচ্ছেন এবং সার্বক্ষণিক পরিষেবা প্রদান করছেন । যদিও সারা বিশ্বে বিভিন্ন তারিখে ডাক্তার দিবস পালিত হয় । যদিও এটি আজ ভারতে পালিত হয় ৷ এটি আমেরিকায় ৩০ মার্চ, ইরানে ২৩ অগস্ট এবং কিউবায় ৩ ডিসেম্বর উদযাপিত হয়। অতিমারী চলাকালীন যোদ্ধা হিসাবে ডাক্তারদের কঠোর পরিশ্রম এবং সেবাকে সম্মান করার জন্য একদিন যথেষ্ট হবে না । কিন্তু একদিন পর আমরা তাদের সেবা ও কাজের প্রশংসা করি, তাদের প্রচেষ্টা ও ত্যাগকে সম্মান করি ।