নিত্যনতুন চোখের সমস্যায় ভুগছেন? পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে চোখের একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চোখের যত্নে পুষ্টির ভূমিকায় গুরুত্বপূর্ণ। চোখ ভাল রাখতে আজই আপনার ডায়েট চার্ট কিছু বদলের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক চোখের যত্নে কীভাবে সাজাবেন আপনার ডায়েট চার্ট। 


এ প্রসঙ্গে এবিপি লাইভকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনন্যা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'যদিও এমন কোনও উপযুক্ত ডায়েট প্ল্যান নেই যা আপনার দৃষ্টিশক্তিকে সম্পূর্ণভাবে উন্নত করতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে খাদ্যের নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টিগুণ সামগ্রিকভাবে চোখকে সুস্থ রাখতে এবং চোখের অন্যান্য সমস্যার  ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি খাদ্য কথা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, মিষ্টি আলু, গাজর, সবুজ শাক-সবজি, ভিটামিন এ, সি এবং ই এর সমৃদ্ধ খাবার।


চলুন দেখে নেওয়া যাক চোখের যত্নে কী খাবেন?



  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে করে ভিটামিট-এ। কাজেই ডায়েটে অবশ্যই ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। এর অভাবে রাতকানা রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

  • ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার যেমন সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম, চিনাবাদাম ইত্যাদি খাবার রাখুন পাতে। এ ছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাইট্রাস ফল যেমন লেবু ইত্যাদিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি চোখের টিস্যুকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়।

  • ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ এবং বিভিন্ন বাদাম খান। দেখা গিয়েছে ওমেগা থ্রি-এর ঘাটতি 'ড্রাই আইজ'-এর সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে  ফ্লেক্স সিড, চিয়া সিড, সোয়াবিন তেল, পালং শাক, সামুদ্রিক মাছ অবশ্যই রাখুন। এ ছাড়াও বয়সজনিত সমস্যাগুলোও বাড়তে পারে এর অভাবে।

  • চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে লুটেন ও জিয়াজেনথিন, বিটা ক্যারোটিন, জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এগুলি হল ক্যারোটিনোয়েড, এদের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে। সেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের অপটিক নার্ভকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। সবুজ শাকসবজিতে এই উপাদান রয়েছে। এই খাবার ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের (চোখের বয়সজনিত সমস্যা, যা মণি মধ্যভাগের দৃষ্টিশক্তি আবছা করে) সমস্যা থেকে চোখকে রক্ষা করে।

  • এ ছাড়াও চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। 


চোখ ভাল রাখতে এড়িয়ে চলবেন কী কী?



  • যে কোনও চর্বিযুক্ত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি এই ধরনের খাবার চোখের রক্তনালীতে ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর ফলে সেন্ট্রাল রেটিনালের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

  • অতিরিক্ত চিনি রয়েছে এমন খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। অন্যথায় ডায়াবেটিসে ঝুঁকি বাড়বে। ডায়াবেটিস আবার ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি এবং ফলস্বরূপ ম্যাকুলার শোথের সাথে চোখকে প্রভাবিত করতে পারে।

  • ধূমপান এবং যাবতীয় নেশার দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন। এগুলো চোখ নষ্ট করে দিতে পারে। এ ছাড়াও সেন্ট্রাল সেরাস কোরিওরেটিনোপ্যাথির মতো সমস্যার কারণ হতে পারে।


মনে রাখুন


তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, গুরুতর সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। উপরে উল্লেখ করা খাবারগুলি একটি প্রাথমিক ধারনা মাত্র। আপনার জন্য কোনটি সঠিক তা আপনার চিকিৎসকই আপনাকে জানাবেন।