কলকাতা: টিবি রোগ এবার ধরা পড়বে আরও সহজে। রোগের বাড়বাড়ন্ত হওয়ার আগে চিকিৎসাও শুরু করা যাবে। সম্প্রতি ল্যানসেটে জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা এমনটাই জানাল গোটা বিশ্বকে। ল্যানসেটে প্রকাশিত ওই গবেষণার গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন একটি নয়া পদ্ধতির। সেই পদ্ধতিতে টিবি রোগের শনাক্তকরণ সহজ হবে বলেই আশা করছে বিশেষজ্ঞমহল।
কেন টিবি মারাত্মক ?
কোভিড নয়, সারা বিশ্ব জুড়ে নিঃশব্দে অন্য এক রোগ মারণরোগের আকারে রয়েছে। আর সেটি হল টিউবারকিউলোসিস বা টিবি। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। এমনকি এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও অনেকটাই। তবে এই রোগের মোকাবিলায় একটি নতুন লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টিবি রোগের প্রকোপ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বের দেশগুলি। ভারত ২০২৫ সালের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ কমিয়ে অনেকটা আনতে চায়।
নতুন পদ্ধতিতে কী সুবিধা ?
টিবি রোগের ব্যকটেরিয়া হল মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। প্রাথমিকভাবে টিবি রোগ ফুসফুসে একটি সংক্রমণের আকারে থাকে। সেই সংক্রমণ বাড়তে বাড়তেই রোগের আকার নেয়। নয়া পদ্ধতিতে সংক্রমণ থেকে রোগ হতে পারে কি না তা বোঝা যাবে। সেটি বোঝা গেলে নির্দিষ্ট সময় থেকেই রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন চিকিৎসকরা। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড কেয়ার রিসার্চ, ইউনিভার্সিটি অব লেসেস্টার ও বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা মিলে এই নয়া পদ্ধতি খুঁজে বার করেছেন।
কী বলছেন গবেষক ?
মুখ্য গবেষক প্রণবাশিষ হালদার সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে বলেন, বর্তমানে যে ধরনের পরীক্ষাগুলি বাজারে উপলব্ধ, সেগুলি মূলত ত্বক বা রক্তের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় কাদের টিবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছ, তা বোঝা যায়। তবে কাদের মধ্যে এই রোগের আশঙ্কা বেশি আর কাদের মধ্যে কম, তা ফারাক করা যায় না। নয়া পদ্ধতিতে কাদের ঝুঁকি বেশি তা বুঝতে সুবিধা হবে।
কেন বেশি ঝুঁকি রোগীদের খুঁজে বার করা জরুরি, তাও বুঝিয়ে বললেন গবেষক। তাঁর কথায়, টিবি রোগের হার কমাতে হলে টার্গেটেড ট্রিটমেন্ট বেশি দরকার। আর রোগের ঝুঁকি কাদের বেশি তা জানা গেলে কাদের চিকিৎসা দরকার তা বোঝা সহজ হয়।
কী সেই পরীক্ষা ?
সাধারণত পিইটি-সিটি ও রক্তপরীক্ষা করে টিবি রোগ শনাক্ত করা হয়। তবে এই নয়া পদ্ধতিতে অ্যাক্টিফাজ নামের একটি বিশেষ পরীক্ষা করা হয়েছে। অ্যাক্টিফাজ আসলে একধরনের ব্যাকটেরিয়োফাজ অ্যাসে পরীক্ষা। ব্যাকটেরিয়োফাজ খুঁজে খুঁজে ব্যাকটেরিয়াকেই আক্রমণ করে। এর ফলে টিবি ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ-কে শনাক্ত করা সহজ হয়ে যায়। যা অন্য পদ্ধতিতে করা মুশকিল।
তথ্যসূত্র - পিটিআই
আরও পড়ুন - Gen Z Screen Time: ফোনের পিছনে দিনে কতটা সময় দেয় জেন জেড ? চমকে দিচ্ছে সমীক্ষার তথ্য