কলকাতা : রাখি পূর্ণিমা। রাখি উৎসব কিংবা রাখি বন্ধন। ভাই-বোনের ভালোবাসাকে উৎসর্গ করা এই দিনটাকে যে নামেই ডাকুন না কেন, তার মাহাত্ম্য একই থাকে। রাখি বন্ধন শুধু কোনও অনুষ্ঠানই নয়, বহু যুগ ধরে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গল কামনা করে তাদের হাতে রাখি পরিয়ে দেয় বোনেরা। পরিবর্তে বোনের সম্মান এবং সুরক্ষার দায়িত্বও নেয় ভাইয়েরা। কবে থেকে আর কেন পালন করা হয় রাখি বন্ধন উৎসব? কী মাহাত্ম্য এই বিশেষ দিনের?
পূরাণ অনুযায়ী জানা যায়, মহাভারতে যুদ্ধের সময় একবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আঘাত লাগে। সেই সময়ে দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির অংশ ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন। এবং এরপর শ্রীকৃষ্ণ সুস্থও হয়ে যান। পরবর্তীতে দ্রৌপদীর সমস্ত সুরক্ষা এবং সম্মান রক্ষার ভার নিয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই দুর্যোধন যখন দুঃশাসনকে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের আদেশ দেন, তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মানরক্ষার দায়িত্ব নেন এবং অদৃশ্য থেকে নিজে স্বয়ং বস্ত্ররূপে দ্রৌপদীকে আবৃত করতে থাকেন। যা হরণ করা সম্ভব হয়নি দুঃশাসনের পক্ষে।
রীতি অনুযায়ী শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় প্রতি বছর দেশ জুড়ে পালিত হয় রাখি বন্ধন উৎসব। এদিন বোনেরা ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করে তাদের হাতে রাখি বেঁধে দেয়। যদিও প্রতিবছর একই দিনে রাখি উৎসব পালন করা হয় না। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় চাঁদের অবস্থান দেখেই এর দিন নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছর ২২ অগাস্ট রবিবার পালিত হবে রাখি বন্ধন। পঞ্জিকা অনুযায়ী ২২ অগাস্ট, রাখি পূর্ণিমার দিন সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকে ১০টা ৩৪ মিনিট পর্যন্ত রাখি পরানোর উপযুক্ত সময়। যদিও ধনিষ্ঠা নক্ষত্রে সংযোগ সন্ধ্যা প্রায় ৭টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। এই সময়ে রাখি পরানো খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন ভাইয়েরা বোনের সারাজীবন সুরক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের হাতে উপহারও তুলে দেয়।